সাইফুর রহমান মিশু

১৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০১:১৮

মুক্তিযোদ্ধা হত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার

ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মেলন আয়োজন করেছিল জামায়াত। সেই সম্মেলনে যোগদান করতে আসা গ্রামের সহজ সরল একজন মুক্তিযোদ্ধা বক্তাদের আপত্তিকর এবং মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে তাকে চূড়ান্তভাবে অপমানিত এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়েছিল। সেই ভিডিও দেখেছে পুরো জাতি। কিভাবে শিবির নেতা লাথি মারছে জাতির একজন সূর্যসন্তানকে। পুরো জাতি ঘৃণা প্রদর্শন করে উক্ত নেতার বিচার চাইলে তৎকালীন সরকার তাকে পুরস্কৃত করেছিল।
জানামতে দলীয়ভাবে সৌদি আরবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এমনটা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল না বিএনপি জামায়াতের কাছে।

এবার আসি স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির দল যখন ক্ষমতায়।

  • ধর্মান্তরিত হবার কারণে মুক্তিযোদ্ধাকে জবাই করে হত্যা।
  • একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দলের পদধারীসহ দলবল নিয়ে মারধর এবং তাদের নামমাত্র গ্রেপ্তার, অতঃপর জামিনে বেরিয়ে হুমকি। যার ভিডিও দেখেনি এমন ব্যক্তি পাওয়া কঠিন হবে।
  • মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা, মামলা হয়েছে।

নিজের পরিবারের কথা বাদ দিয়ে শুধু জানতে চাই উপরোক্ত ঘটনাসমূহের অন্তত একটি ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়েছে, যাকে অন্তত ন্যায়বিচার বলে সান্ত্বনা দেয়া যায়। এছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপর নির্যাতনের কথা একেবারেই বাদ দিলাম।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পেয়েছি। ৪৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। তার জন্য দায়ী করি ৭৫ এর পরবর্তী সরকারগুলোকে। এখন তো আর তারা নেই ক্ষমতায়। পর পর দুইবার ক্ষমতায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দল। তবুও বার বার প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াতের ঘাপটি মারা লোকজনের উপর দায় দেয়াটা গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে দিন দিন। দুই টার্মে ক্ষমতায় থেকে যদি প্রশাসন থেকে তাদের সরাতে না পারি তবে সমস্যাটা যে অন্য জায়গায় তা বুঝে নেয়া উচিত।

বিএনপি-জামায়াতের সময়ে এরচেয়ে বেশি হয়েছে, হ্যান হয়েছে, ত্যান হয়েছে এসব বলতে আসা লোকজনের কোন আদর্শ নেই। এসব বলতে আসা মানেই হলো বিএনপি-জামায়াতের সাথে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দলকে তুলনা করে মূল অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করা। এসব শোনার জন্য জনগণ ভোট দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দলকে ক্ষমতায় বসায়নি।

মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কোন মুক্তিযোদ্ধা এভাবে নির্যাতিত হবে, এবং তা নিয়ে নিশ্চয়ই ক্ষোভ প্রকাশ করা অযৌক্তিক হবে না। নিশ্চয়ই এই সরকারের আমলে কোন মুক্তিযোদ্ধাকে অত্যাচারিত হতে দেখলে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবী করতেই পারি। এই দাবী করা এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রাপ্য সম্মান দিবে আশা করি বলেই তো মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার।
(ফেসবুক থেকে)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত