সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

০৫ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ০৯:৪১

‘বাংলাদেশের সংবিধান খুলে দেখুন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দেখতে পাবেন’

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ,  সংবিধান প্রণেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুরঞ্জিতের অবদানের কথা স্বীকার করে চলছে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ এই রাজনীতিবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, " আমাদের দেশের সংবিধানটি খুলে দেখুন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দেখতে পাবেন"।

তিনি লিখেছেন, 

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হচ্ছেন হাতে গোনা সেইসব কয়েকজন ব্যক্তির একজন যারা বাংলাদেশ নামক দেশটি গঠনের জন্যে মৌলিক অবদান রেখেছেন। আমাদের দেশের সংবিধানটি খুলে দেখুন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দেখতে পাবেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় ভাগ, যেখানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিমালাগুলি লেখা আছে, সেখানে একটু ভাল করে দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন কোন কোন বিধানগুলি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের তৎপরতায় যেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

না, তিনি একা সেগুলি করেননি। একটা সংগঠিত উদ্যোগের মুখপাত্র ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগ, উৎসাহ, দক্ষতা ও দৃঢ়তা না থাকলে সোশ্যালিস্ট ধরনের সেইসব মৌলিক ধারনা আমাদের সংবিধানে কি থাকতো? সম্ভবত থাকতো না। এই প্রসঙ্গে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল একদিন একই অনুষ্ঠানে ডঃ কামাল হোসেন আর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দুইজনেরই কথা শোনার। ততদিনে দুইজনেরই অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগে আর ডঃ কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের বাইরে। ইন্টারেস্টিংলি, সোশ্যালিস্ট ধরনের এইসব মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিমালার ব্যাপারেও ততদিনে দুইজন অবস্থান পাল্টে একে অপরের জায়গায় চলে এসেছেন। সেই কথা আরেকদিন বলি।

ভোরবেলা আমার স্ত্রী ধাক্কা দিয়ে আমাকে ঘুম থেকে তুলে জানালেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই। সূর্যাস্তের একটু আগেই নাকি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ আর কোনদিনই জানবেন না অনেক সমালোচনা ও রাজনৈতিক বিরোধের পরেও তাঁর প্রতি ইমতিয়াজ মাহমুদের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসাও ছিল। একাকী লড়েছেন এই যোদ্ধা, আমাদের ইতিহাসে তাঁর অবস্থান উজ্জ্বল ছিল, উজ্জ্বলই থাকবে। বিদায়।




রোববার ভোর রাত ৪টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই নেতা।  গত মে মাসে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাঝখানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা সুরঞ্জিত দেশ স্বাধীনের পর সংবিধান প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন।সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য; স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ চার দশকের প্রায় সব সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বামপন্থী এই নেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত