সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

০১ মার্চ, ২০১৭ ১৮:০১

শাজাহান খানের অপসারণ দাবিতে সরব সোশ্যাল মিডিয়া

পরিবহন শ্রমিকদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে মন্ত্রীসভা থেকে অপসারনের দাবি উঠেছে। দু'দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দাবি তুলেছেন অনেকে। পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট ও নৈরাজ্যে পেছনে শাজাহান খানের ইন্ধনেরও অভিযোগ তুলেছেন তারা।

দুই চালকের শাস্তির প্রতিবাদে মঙ্গল থেকে সারা দেশে ধর্মঘট শুরু করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। দুই দিন অবর্ননীয় দূর্ভোগের পর বুধবার দুপুরে সরকারের মধ্যস্থতায় ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।  শাজাহান খান নিজেই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। দুপুরে শাজাহান খান-ই ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

এরআগেও বিভিন্ন সময়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মঘট ডাকে পরিবহন শ্রমিকরা। শাজাহান খানের প্রশ্রয়েই তারা এমন করছে এমন অভিমত ফেসবুক ব্যবহারকারিদের। তাই এই শ্রমিক নেতাকে মন্ত্রীসভা থেকে অপসারণের দাবি করছেন তারা।

লেখক-সাংবাদিক আরিফ জেবতিক ফেসবুকে লিখেন, 'মন্ত্রীসভা থেকে শাজাহান খানের বহিষ্কার চাই! শাজাহান খানদের লাইসেন্সবিহীন খুনি ড্রাইভারদের হাতে আমার আপনার প্রিয়জন যেন আর হারিয়ে না যায়, এই প্রত্যয়ে উচ্চকণ্ঠ হোন।'

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহাঙ্গির এ নোমান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, মন্ত্রী শাজাহান খান খুনি ট্রাক চালককে বাঁচাতে জিম্মি করেছেন সারাদেশকে। এই মন্ত্রীকে অনতিবিলম্বে বহিষ্কার করুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।'

শাহজান খানকে ‌'পরিবহন ধর্মঘটের নামে যাত্রীদের দূর্ভোগ ও হয়রানীর মূল হোতা' উল্লেখ করে ম্যাক সুমন ফেসবুকে লিখেন- 'মন্ত্রী শাহজাহান খানের পদত্যাগ দাবী করছি'।

সাংবাদিক প্রভাষ আমিন তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, কর্মবিরতিতে যান বাসচালকরা, প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। কেন, কেন, কেন?

লেখক হাসান মোরশেদ দেশে মানুষদের জন্যে কোন মন্ত্রী নাই উল্লেখ করে লিখেন, শ্রমিকদের মন্ত্রী আছে, পুলিশের ও আছে; ডাক্তারদের এমনকি পশুদেরও মন্ত্রী আছে এই দেশে। সাধারণ মানুষের নাই। মানুষের পক্ষে কথা বলার, মানুষের দাবী আদায়ের, মানুষের ভোগান্তি কমাতে কেউ নাই। এইটাই সরল সত্য।'

মন্ত্রী শাজহান খানের অপসারণ দাবি করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারও। ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর তিনি নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লিখেন, 'ধর্মঘট তো প্রত্যাহার হলো! এবার শাজাহান খানরে প্রত্যাহার করুন।'

শাহজাহান খানের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিকদের নৈরাজ্যে প্রশ্রয় প্রদানের অভিযোগ ওঠেছিলো সিলেট আওয়ামী লীগের তরফ থেকেও।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট পরিবহন শ্রমিকরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর গাড়ি। ওইদিন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় দলের শীর্ষ নেতারা শাজাহান খানকে ইঙ্গীত করে বলেছিলেন, পরবর্তীতে পরিবহন শ্রমিকদের আশ্রয় দিলে তাকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক  মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরের নিহত হওয়ার ঘটনায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পর উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে পরিবহন ধর্মঘট পালিত হয়। এরপর খাদিজা খুনের ঘটনায় ট্রাকচালক মীরুর ফাঁসির আদেশ আসলে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকে মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

মন্ত্রী ধর্মঘটের প্রথম দিন পরিবহন শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে গেছে হিসেবে দাবি করলেও পরের দিন নিজে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহবান জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত