০২ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৪:২২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সব চায়ের দোকান হুট করেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকাল থেকে টিএসসি চত্বরে কোনো চায়ের দোকান খুলতে দেওয়া হয়নি।
চায়ের দোকানিরা জানান, আগের রাতে প্রক্টোরিয়াল দলের সদস্যরা এসে আজ (মঙ্গলবার) থেকে চায়ের দোকান খুলতে নিষেধ করেছেন তাঁদের। সকালেও দোকান খুলতে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তাঁদেরকে বলা হয়েছে, এখানে আর দোকান করা যাবে না।
টিএসসির পরিচালক এ এম মহিউজ্জামান অবশ্য জানিয়েছেন, এমন কোন নির্দেশনা আছে বলে তাঁর জানা নেই।
এদিকে, চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। প্রগতিশীল সংস্কৃতি ও রাজনীতি চর্চার অন্যতম এই স্থান টিএসসিকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই।
ব্লগার আরিফ জেবতিক ফেসবুকে লিখেছেন-
টিএসসির সামনের চা দোকানগুলো বন্ধ করার তীব্র নিন্দা জানাই। মুক্ত প্রাণ বন্ধ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বলয় ঘেষে যুগের পর যুগে তৈরি হয়ে ওঠা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের সংস্কৃতিকে গলাটিপে হত্যা করে এক একরৈখিক জ্বিহুজুরের মেরুদণ্ডহীন সমাজ তৈরির দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের অংশ এইগুলো।
যেভাবে ছবির হাট বন্ধ করা হয়েছে, সন্ধ্যার পর টিএসসি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে-দুইদিন পর হাকিম চত্ত্বর আর মধুর ক্যান্টিনও নানা ছলছুতোয় বন্ধ করে দেয়া হবে, শাহবাগে একটি বীভৎস কালো স্ক্রিন খামোখা খামোখাই তৈরি করা হয়নি-এই সব মিলিয়ে একটি ষড়যন্ত্র আমাদের চারপাশে এটে বসছে।
পাবলিক স্পেসগুলো ধীরে ধীরে সংকুচিত করে শুওরের বাচ্চারা আমাদেরকে বাসার ছাদে তুলে দিচ্ছে।
এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, সোচ্চার থাকুন।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত সাংবাদিক ফজলুল বারী লিখেছেন-
ওখানকার চা খেয়ে পোলাপান মিছিলে নামে, সাংস্কৃতিক কর্মীরা গান গায়, কবিতা আবৃত্তি করে। পেটমোটা দালালদের আপাতত ওখানে যাবার সময় নেই।
চায়ের দোকান বন্ধের ঘটনায় এমন আরও অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন ফেসবুকে। তারা আশঙ্কা করছেন, পহেলা বৈশাখের আয়োজন আর থার্টি ফার্স্ট নাইট সন্ধ্যার আগে পালনের নির্দেশের পর মুক্তবুদ্ধি চর্চার অন্যতম স্থান টিএসসিতে চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়া দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন, যা বাংলাদেশকে নিশ্চিতভাবেই পেছনের দিকে ঠেলে দেবে।
আপনার মন্তব্য