নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২০:৫৯

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, মশাল মিছিল

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কট নিরসন এবং ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে এমবিএ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে এক মশাল মিছিল বের করে।

পরে মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

উত্তম সরকারের সভাপতিত্বে এবং ফাহিম আহমেদ চৌধুরী’র পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন পল্টু কুমার রায়, রাহাত আহমদ, নাজমুল ইসলাম, সোমা সাহা, লাজিনা, দীপ্ত রায় প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরত ২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের পরদিন আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ ৫দফা দাবি না মানলে করলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেন নি, বরং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে হয়রানি করছেন। তাই ছাত্ররা বৃহতর আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ এমবিএ’র ক্লাস পরীক্ষা বর্জন এবং মশাল মিছিল করেছে।

আরও পড়ুন: সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী হেনস্তার অভিযোগ

বক্তারা আরও বলেন, অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়ন না করলে সিলেটের সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গকে যুক্ত করে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বক্তারা বলেন, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আভ্যন্তরীণ নানা সংকটের কারণে দীর্ঘদিন থেকে জটিলতা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা, ভিসি, প্রো-ভিসি, ডীন সহ প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে স্থায়ী নিয়োগ না থাকায় ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব। ফলে যে সমস্ত শিক্ষার্থী সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ছি তাদের শিক্ষা জীবন আজ হুমকির মুখে।

এনিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে তার চাপে প্রশাসন আশ্বাস প্রদান করে যে, অচিরেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু আশ্বস্ত করার এতদিন পরেও যখন কোন সুরাহা হয়নি এবং প্রশাসন থেকে কোন যথোপযুক্ত বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছেনা তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও আন্দোলনে নামে।

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখে শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত ভিসি মহোদয়ের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ভিসির কার্যালয়ে অবস্থানরত জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক উদ্দিন তাজ ছাত্রদের ধাক্কা দিয়ে ভিসির কার্যালয় থেকে বের করে দেন এবং বাহিরে অবস্থানরত বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা করেন। এতে আন্দোলনরত ৭/৮ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।

আরও পড়ুন: এসআইইউতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রাক্তনদের সমর্থন

এর প্রেক্ষিতে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। উপরন্তু হামলার শিকার ফাহিম আহমদ চৌধুরী ও উত্তম সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

প্রশাসনের এমন আচরণে ছাত্ররা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। হামলা করে, মামলার ভয় দেখিয়ে ছাত্রদের যেভাবে হয়রানি করা হচ্ছে আমরা তার প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত