নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ মে, ২০১৮ ০১:১৬

‘বিদেশ গিয়ে আমার মতো কোনো নারী যেন আর নির্যাতিত না হয়’

মাসিক ১৩ হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মী হিসেবে চার বছর আগে কুয়েত গিয়েছিলেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের ফাতেমা বেগম। সেখানে তিনবছর থেকেও প্রাপ্য বেতন পাননি তিনি। উল্টো নানা নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে।

রোববার বিকেলে সিলেটে আয়োজিত 'বৈশ্বিক উন্নয়ন এজেন্ডার আলোকে অভিবাসন চ্যালেঞ্জ: প্রসঙ্গ বাংলাদেশ'- শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এসে কাজের জন্য বিদেশে গিয়ে নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন ফাতেমা।

তিনি বলেন, সে দেশে যাওয়ার পরই আমার মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয়। বাসায় সকাল ৬ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করতে হতো। কিন্তু কোনো টাকা দিতো না। আরও নানা মানসিক নির্যাতন করতো। বাংলাদেশে আসতে চাইলে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাত।

দেশে আমার পরিবার ও সন্তানরা টাকা পাঠানোর কথা বলতো। কিন্তু আমি টাকা পাঠাতে পারতাম না। এ ব্যাপারে কফিলের সাথে যোগাযোগ করলে কফিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছে বলে জানায়। কিন্তু দেশে আমার পরিবারের কাছে কোনো টাকা এসে পৌঁছায় নি। তিন বছর পর কেঁদেকেটে দেশে ফিরে আসি। দেশে আসার সময় আমারে নগদ ৬০ হাজার টাকা ও বিমান টিকিট বাবদ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বিদেশ গিয়ে তিন বছরে এই এক লাখ টাকাই আয় করেছি আমি।

তিনি বলেন, 'বিদেশ গিয়ে আমার মতো আর কেউ যেন নির্যাতিত না হয় এ জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।'

রোববার বিকেলে নগরীর একটি হোটেলের হলরুমে এই সংলাপের আয়োজন করে ব্র্যাক ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।

এতে বিদেশ গিয়ে প্রতারিত ও নির্যাতিত হওয়া বিভিন্ন ভুক্তভোগী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, এনজিওকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংলাপে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, এনজিও ব্যুরোর মহা পরিচালক একেএম আব্দুস সালাম ও শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন।

ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আহমেদ মুশতাক রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি'র ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান।

বক্তারা প্রবাসে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে হয়রানি নিরসন, দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, বিদেশে শ্রমিক নির্যাতন বন্ধে হাইকমিশনের জোরালো পদক্ষেপ ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত