নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ জুলাই, ২০১৮ ০১:০৮

সরে দাঁড়ালেন মিঠু, বিনা ভোটে জয়ের পথে আজাদ

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিঠু তালুকদার। ফলে এই ওয়ার্ডে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ। আজাদ এরআগেও তিনবার এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে আজাদকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন মিঠু। সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনি নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। রোববার রাতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামানের বাসায় এক বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেন মিঠু।

গত তিন সিটি নির্বাচনেই এ ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর বিজয়ী হন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। এবার তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মিঠু তালুকদার। মিঠু সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এডভোকেট রনজিত সরকারের ভাগনে।

সিলেটের আওয়ামী রাজনীতিতে আজাদ-রনজিতের বিরোধ অন্যতম আলোচিত ইস্যু। একসময়কার এই দুই বন্ধু টিলাগড় এলাকার ছাত্র রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত কয়েকবছর ধরে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এ দ্বন্দ্ব বেশকয়েকবার সংঘাতেও রূপ নেয়। প্রাণ হারান কয়েকজন ছাত্রনেতা।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, আজাদুর রহমান আজাদকে টেক্কা দিতেই এবার মামা রনজিতের পরামর্শে প্রার্থী হন মিঠু। এতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বতার মুখে পড়েন আজাদ। আজাদ-মিঠু দু'জনই প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে ওই এলাকায় আতঙ্কও দেখা দেয়। দেখা দেয় সংঘাতের শঙ্কা।

এদিকে, আজাদ নিজে ও রনজিতের ভাগনে পরষ্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানও বিপাকে পড়েন। আজাদ-রনজিত দু'জনই কামরান অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কাউন্সিলর পদ নিয়ে আজাদ-রনজিত মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় কামরানকে বিপাকে ফেলে। এই দুই নেতার বিরোধ টিলাগড় এলাকায় কামরানের ভোটেও প্রভাব ফেলার শঙ্কা দেখা দেয়। এমন শঙ্কা থেকে আজাদ-রনজিতের বিরোধ মেটাতে উদ্যোগী হন কামরান। দলের শীর্ষ পর্যায়ের আরও কয়েকজন নেতাও বিষয়টি আপোসে মীমাংসার জন্য আজাদ-রনজিতকে চাপ দেন।

বিষয়টি সমঝোতার জন্য রোববার রাতে আজাদুর রহমান আজাদ, রনজিত সরকার, মিঠু তালুকদারসহ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে নিজ বাসায় বৈঠকে বসেন আনোয়ারুজ্জামান। ওই বৈঠকে দুই নেতার বিবাদের বরফ গলে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন মিঠু তালুকদার। ফলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি থাকায় বিনা ভোটেই নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আজাদ।

এ ব্যাপারে মিঠু তালুকদার বলেন, দলের স্বার্থে আমি আজাদুর রহমান আজাদকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোমবারই নির্বাচন কমিশন থেকে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করি।

এ ব্যাপারে রনজিত সরকার ও মিঠু তালুকদারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, দলের স্বার্থে আমরা সবাই এক। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত