নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ অক্টোবর, ২০১৯ ১৭:৩৮

‘অনুতপ্ত’ মেয়র, গাছ কাটার বিষয়ে ‘জানতেন না’ দাবি

গোঁড়া থেকে যাওয়া গাছগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা

সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাঠানটুলার সড়ক বিভাজকের গাছগুলো কাটার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তাকে না জানিয়েই সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ গাছগুলো কেটে ফেলে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে পাঠানটুলা এলাকায় গিয়ে বৃক্ষরোপণকারী প্রয়াত আব্দুল বাতেনের পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে দুঃখও প্রকাশ করেন মেয়র।

একই সময় ভূমিসন্তান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গোঁড়া থেকে যাওয়া গাছগুলোকে সেবা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানান ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির। ওই সময় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ও ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ বেঁচে যাওয়া বেশ কয়েকটি গাছের গোঁড়া পরিচর্যা করেন।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এত বড় গাছ কাটা হয়েছে আমি জানতাম না। সরজমিনে এই কাটা গাছগুলো দেখে আমি আহত হয়েছি। এ ঘটনায় আমি অনুতপ্ত। এটার দায়িত্বে ছিল সিসিকের প্রকৌশল বিভাগ। আর যেন গাছ কাটা না হয় এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলে দিব। আর যেসব জায়গায় সড়ক বিভাজকের উপযোগী নয় এমন গাছ লাগানো আছে সেগুলো পরিদর্শন করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে স্থানান্তর করা হবে।

ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির বলেন, এভাবে গাছ নিধন মেনে নেওয়া যায় না। নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন করবেন ফুলগাছ দিয়ে। এটা ভালো উদ্যোগ কিন্তু এর জন্য যে গাছগুলো ডিভাইডারে আছে সেগুলো কেন কাটতে হবে। পরিকল্পনা করলে এই গাছগুলোর ফাঁকে ফাঁকেও ফুলগাছ লাগানো যায়। সিসিকে অনেক প্রকৌশলী আছেন। তারা যদি দপ্তর ছেড়ে সরজমিনে এসে এসব কাজের পরিকল্পনা করতেন তাহলে এই বৃক্ষ নিধন হতো না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, নগরের বৃক্ষ রোপণ, বৃক্ষ কর্তনসহ বৃক্ষ সংশ্লিষ্ট যেকোনো সিদ্ধান্তের জন্য একটি নগর সবুজায়ন কমিটি করা হয়েছিল। যার আহবায়ক ছিলেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। ওই কমিটিতে আমাকেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গাছ রোপণ বা কর্তনের জন্য আজ পর্যন্ত ওই কমিটি কোনো পরামর্শ সভা করেনি। শুধু নামে মাত্র একটি কমিটি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সিসিকের কাছে এ ধরনের কাজ কাম্য নয়। সারাদেশে যখন মানুষ বৃক্ষরোপণ অভিযান করছে তখন আমার শহরে গাছ কাটে খোদ সিটি কর্পোরেশন। তাছাড়া এটা প্রথমবার নয়। দুই মাস আগেও এই সড়কের আরেকটি ডিভাইডারের অনেকগুলো উইপিং গাছ কাট হয়েছিল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে। তাই এই ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে সিসিকের আরও তৎপর হওয়া উচিত।

নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুল গাছ রোপণ করতে গত সোমবার পাঠানটুলা এলাকার সড়ক বিভাজকের ৪৮টি গাছ কাটা হয়। যার মধ্যে ২২টি ছিল তাল গাছ ও বাকীগুলো ছিল ওষধি ও ফলজ গাছ। এই গাছ কেটে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ কর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত