সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০৩

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবারে আরেক কালরাত

রোববার মধরাতে দক্ষিণ সুরমায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাহিদ আল সালাম।

এঘটনায় ফেসবুকে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মাহিদের ফুফু গোবিন্দগঞ্জের আব্দুল হক স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক পান্না জান্নাত।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্তান মাহিদের এমন মৃত্যুকে ২৫ মার্চ কালরাতে এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবারে আরেকটি 'কালরাত' বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ফেসবুকে পান্না জান্নাত লেখেন-

২৫ মার্চ ১৯৭১ সাল। মধ্যরাতে অতর্কিত বাংলার নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায় পাকিস্তান সরকারের পোষ্য সামরিক বাহিনী, হিংস্র হায়েনার দল। স্বাধীনতার ৪৭ বৎসর পর ২৫ মার্চ আবার কালরাত্রি হয়ে এলো এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে।

মরহুম মুক্তিযোদ্ধা এম এ সালাম এডভোকেটের কনিষ্ট সন্তান, সিলট মহানগর আওয়ামীলীগের  সাংগঠনিক সম্পাদক এ টি এম হাসান জেবুলের ভাতিজা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন কারি মাভৈ আবৃত্তি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত মাহিদ আল সালাম (মেহেদি) ঢাকায় যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর অতর্কিত আক্রমণণে জীবন দিতে বাধ্য হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে। ঝরে যায় একটি তাজা প্রাণ। তারা ৪ ভাই বোনের মধ্যে সে ছিল সর্ব কনিষ্ট। তার বড়বোন ডা. ফারহানা সালাম, ছোটবোন আফসানা সালাম, সহঃকারী অধ্যাপক,ইংরেজী বিভাগ,শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ও একমাত্র বড় ভাই ইংল্যান্ডে প্রবাসী ছাইদ আল সালাম, মা এড. আমিনা সালামসহ চাচা ফুফু ও অসংখ্য গুণগ্রাহী বর্তমান।

আমার আজ ঘরে বসে থাকার কথা নয়। আমার থাকার কথা শহীদ মিনারে, থাকার কথা কলেজে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনে। হায়রে এত সাধের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা দিবস পালন করছি আমার ভাতুষ্পুত্রের লাশ হাসপাতাল থেকে গ্রহণের মাধ্যমে। ছিনতাইকারী তার উরুতে ছুরিকাঘাত করে। আনুমানিক রাত ১২ টার দিকে। হাসপাতাল ভর্তি করা হয় আনুমানিক রাত ২ টায়। ছুরিকাঘাতে সাথে সাথে তার মৃত্যু হয় নি।মৃত্যূ হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে।

জানিনা এখানে রাস্তার জনগণের, আইনশৃঙখলা বাহিনীর কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন অবহেলা ছিল কি না।থাকা খুব স্বাভাবিক।

রাত৩.১৫ঘটিকায় তার চাচা জেবুল হাসানকে অবগত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখন সে চলে গেছে না ফেরার দেশে। আমি স্বাধীনতা দিবস পালন করব আমার ভ্রাতুষ্পুত্রের লাশ কাঁধে নিয়ে? স্বাধীনতা, আমার প্রিয় স্বাধীনতা। ছিনতাইকারীর ও স্বাধীনতা, দুর্নীতিবাজ, হত্যাকারীর স্বাধীনতা, জঙ্গী, রাজাকারেরও স্বাধীনতা। ঘুষ খাওয়ার স্বাধীনতা। প্রশাসন বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলারও স্বাধীনতা। এতই স্বাধীন দেশ, আমার সোনার বাংলাদেশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত