মাঈনুল ইসলাম নাসিম

০৯ মে, ২০১৬ ১১:২৯

স্পেনে ১.৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বাণিজ্যের পথে বাংলাদেশ

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে স্পেনে ১.৯ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে যাওয়ার সুসংবাদ জানিয়েছেন মাদ্রিদে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার।

এ বছরের মার্চ পর্যন্ত রপ্তানি বাণিজ্যের অগ্রগতি এবং গত কয়েক বছরের প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় নিশ্চিতভাবেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হতে চলেছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকারকে গত বছর স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। বিসিএস (পুলিশ) ১৯৮২ ব্যাচের এই কর্মকর্তা র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি)’র দায়িত্বও পালন করেন তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনে।  
 
রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাবার পর মাদ্রিদে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপের নিকট পরিচয়পত্র পেশ করেন রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার। স্পেন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং দূতাবাসের কার্যক্রম নিয়ে সপ্তাহান্তে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলছিলেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল স্পেন। সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিটা যেহেতু আগে থেকেই অনেক গভীর, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাবার প্রয়াস পাচ্ছি এবং চালিয়ে যেতে চাই। তাছাড়া বিদেশে আমাদের যে মিশনগুলো আছে, আমাদের সবারই উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখে কাজ করে যাওয়া”।
 
রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার জানান, “মাদ্রিদের বাংলাদেশ দূতাবাস দু’টি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছে। একটি হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা যারা এদেশে উপার্জন করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য প্রণিধানযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন, তাদেরকে সহায়তা দেয়া, যেটাকে আমরা কনস্যুলার সার্ভিস বলে থাকি। স্পেনে বসবাসরত বাংলাদেশীদের বড় একটি অংশ যেহেতু রাজধানী মাদ্রিদ থেকে অনেক দূরে বার্সেলোনায় বসবাস করেন, তাই আমরা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেখানে ২ মাস পরপর কনস্যুলার সেবা প্রদানের। সিদ্ধান্ত মোতাবেক এটি এখন চলছে এবং এতে করে প্রবাসী ভাই-বোনদের দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হয়েছে, ভবিষ্যতে আরো হবে”।
 
আমদানি-রপ্তানি ভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বাংলাদেশে স্প্যানিশ বিনিয়োগ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, “প্রবাসীদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার পাশাপাশি যে বিষয়টিকে আমরা প্রায়োরিটি দিয়ে থাকি তা হচ্ছে আমাদের দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করার জন্য যা যা করণীয় তার সবটাই করা। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় বুনিয়াদটা আমরা রচনা করতে যাচ্ছি আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরো সুদৃঢ় করার মাধ্যমে। বিদেশে বাণিজ্য বাড়ানো এবং দেশে বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসার মাধ্যমেই এটা সম্ভব। জেনে খুশি হবেন, স্পেনে চলতি অর্থবছরে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য ১.৯ বিলিয়ন ডলারের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, আস্থার সাথে বলতে পারি ইনশাআল্লাহ আমরা তা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছি”।
 
রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকার আরো জানান, “বাংলাদেশের জ্বালানী খাতে ইতিমধ্যে স্পেনের বেশ কিছু দৃশ্যমান বিনিয়োগ রয়েছে, যা আরো সম্প্রসারিত হবে ভবিষ্যতে। আরেকটি বিষয় না বললেই নয়। স্পেনের রাজকীয় পর্যায়ে এবং সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের একটা বিশেষ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি, যেটাকে আমরা কূটনৈতিকভাবে এখন কাজে লাগাচ্ছি। স্প্যানিশ অথরিটির কাছে এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভাবমূর্তিও আশাব্যঞ্জক, যা ধরে রাখতে আমাদের সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি জানি, এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ আছেন এখানকার বাংলাদেশীরা, কারণ তাঁদের মধ্যে আছে দেশপ্রেম, আছে বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা”।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত