নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ২২:৩৫

পর্দা নামলো ৮দিনব্যাপী লোকনাট্য উৎসবের

শেষ দিনে রংপুরের 'কানাই চাঁদের নন্দিনী' মঞ্চস্থ

কানাই চাঁদের নন্দিনী নাটকের একটি মুহুর্ত

সিলেটে পর্দা নামলো ৮ দিনব্যাপী প্রথম লোকনাট্য উৎসবের। সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মঞ্চে নাট্যমঞ্চ সিলেটের আয়োজনে শুরু হওয়া এ উৎসবের সমাপ্তি হয় রোববার (২৭ জানুয়ারি জানুয়ারি) রাতে মুক্তমঞ্চে লোকগান পরিবেশনের মধ্যদিয়ে। উৎসবের সমাপ্তি উপলক্ষে রংপুর নাট্যকেন্দ্রের 'কানাই চাঁদের নন্দিনী' নাটক পরিবেশনের পর মুক্তমঞ্চে নগরনাট সিলেট পরিবেশন করে লোকগান। এসময় বিভিন্ন সংগঠনের নাট্যকর্মীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় কবি নজরুল অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণ। লোকগান পরিবেশন চলে গভীর রাত পর্যন্ত।

এর আগে ৮ দিনব্যাপী লোকনাট্য উৎসবের শেষ দিন সন্ধ্যা সড়ে ৬ টায় সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে 'রংপুর নাট্য কেন্দ্র' মঞ্চস্থ করে তাদের নাটক 'কানাই চাঁদের নন্দিনী।' এ নাটকের মূল গল্প কবি দ্বীজ কানাই এবং নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন লিটু সরকার।

নাটকে দেখা যায়, প্রথম প্রহরের ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে চলি­শোর্ধ্ব হুমরা সর্দার দাড়িয়ে আছেন ধনু নদীর তীরে। চোখ-মুখের গভীর চিন্তা উত্তেজনায় পরিণত হয়েছে ছড়িয়েছে পরেছে পেশীবহুল শক্তসমর্থ দেহে, যতো দ্রুত সম্ভব নদী পার হয়ে চলে যেতে হবে কাঞ্চনপুর গ্রাম ছেড়ে। কুঞ্চিত ভ্রুর চেয়েও কালো চোখ, তারচেয়ে কালো শরীর, বেদে সর্দার চুরি করে এনেছেন এক কন্যা সন্তান। শাপ ধরার মন্ত্র শিখিয়ে নিজের মেয়ের পরিচয়ে রেখেছেন বেদে দলে। সেই কন্যা সন্তান নাম তাঁর 'মহুয়া'। সে প্রেমে পড়ে এক জমিদার পুত্রের। এমনি এক নয়নাভিরাম দৃশ্য নিয়ে শুরু হওয়া 'কানাই চাঁদের নন্দিনী' নাটকের শেষ হয় মহুয়ার হৃদয়বিদারক মৃত্যুর মধ্যদিয়ে। নাটকে জাত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রেমের জয় উঁকি দেয়।

এদিকে নাটকের পর আয়োজক সংগঠন নাট্যমঞ্চের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী দল রংপুর নাট্যকেন্দ্রের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

এর আগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এ উৎসবের উদ্বোধন হয় গত ২০ জানুয়ারি বিকাল ৫ টায়। সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মুক্তমঞ্চে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৮ দিন ব্যাপী লোক নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। ‘লোকবাংলার আহ্বানে, মঞ্চ জাগাও জয়গানে’ এই স্লোগানে সিলেটের প্রতিশ্রুতিশীল নাট্য সংগঠন নাট্যমঞ্চ সিলেট এই উৎসবের আয়োজন করে। এসময় জাতীয় লোক নাট্যোৎসব উপলক্ষে লোক নাটকে মিলন কান্তি এবং লোক সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য সুষমা দাসকে নাট্যমঞ্চ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

উৎসবে অংশ নেয় বরিশাল বিভাগের ‘ভোলা থিয়েটারের ‘গ্রন্থিকগণ কহে’, রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জের ‘আলকাপ পঞ্চরস’, চট্টগ্রাম বিভাগের ‘অ্যাভাঁগার্ড’, ময়মনসিংহ বিভাগের ‘বহুরূপী নাট্যসংস্থা’, সিলেট বিভাগের ‘নাট্যমঞ্চ সিলেট’, ঢাকা বিভাগের ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন, ঢাকা’, খুলনা বিভাগের ‘বিবর্তন, যশোরের 'ব্রাত্য আমি মন্ত্রহীন’ ও রংপুর বিভাগের ‘রংপুর নাট্যকেন্দ্র’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত