নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ০৩:০৩

‘কোর্ট মার্শাল’ মঞ্চস্থ, আজ ‘স্বপ্নলোকের চাবি’

সম্মিলিত নাট্য পরিষদের একুশের আলোকে নাট্যপ্রদর্শনী

‘একুশে মিছিল, একুশে হাঁটা, একুশ মানে না পথের কাঁটা’ এই স্লোগানে মহান ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে সিলেটের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম চালিকাশক্তি সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনীর ১৭ দিনব্যাপী আয়োজনের ১৩তম দিন বৃহস্পতিবার মঞ্চস্থ হয় ‘কোর্ট মার্শাল’ নাটক। সন্ধ্যা ৭টায় কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে মঞ্চে নাটকটি মঞ্চায়ন করে কথাকলি সিলেট।

স্বদেশ দীপকের মূল গল্প থেকে এটি রূপান্তর করেন এস.এম সোলায়মান। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আমিনুল ইসলাম লিটন।

নাটক মঞ্চায়ন শেষে নাট্যদলের হাতে ফুল ও স্মারক তুলে দেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অনিরুদ্ধ কুমার ধর শান্তনু। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী মিশু ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত। এছাড়া সিলেটের নাট্যকর্মী অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামীম আহমেদ এডিশনাল পি.পি, অ্যাডভোকেট জুনেল আহমেদ এ.পি.পি এবং অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম এ.পি.পি মনোনীত হওয়ায় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়।

Low is the Command of the Suvereign বাক্যটি সকল পোশাকি মানুষই ঘৃণা করেন প্রকাশ্যে কিন্তু ধারণ করেন গোপনে। এ অবস্থা সব কালে সব দেশেই ঘটে। আমাদের দেশেও মাঝে মাঝে আইন হয়ে ওঠে বে-আইনের প্রকাশ্য পোশাক। বিচার হয়ে ওঠে অবিচারের আইনসিদ্ধ প্রতিলিপি। কোর্ট মার্শাল তেমনই এক নাটক। পৃথিবীর শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাসে পরাজিত শ্রেণির এক মানুষ সিপাহী আকবর।

আকবরের মা বীরাঙ্গনা। মুক্তিযুদ্ধে যারা মানসিক ও মানবিক ক্ষতের দাগ নিয়ে বেঁচেছিলেন জাতি তাদেরকে দেয় বীরাঙ্গনার সম্মাননা। কিন্তু আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া মায়ের বীরাঙ্গনা উপাধি আকবরকে দাঁড় করায়নি মাথা উঁচু করে। বরং তাড়া করে বেরিয়েছে তাকে লজ্জা ও অপমানের হিংস্র থাবায়। আকবরকে অপদস্থ করেছে তারা- যারা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীদের উত্তরাধিকার। এবং পরবর্তীতে যারা আবার ফিরেছে ক্ষমতার অংশীদারিত্বে। ঘুরে দাঁড়ায় সিপাহী আকবর। বিচার যেখানে অন্ধ; সেখানে অবিচার দিয়ে অবিচারের পথ রোধ করে আকবর।

এই নাটকের সামাজিক শ্রেণিদ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, সামন্ত প্রবৃত্তির উৎপীড়ন বা চিন্তার স্তরে সামন্ত নৈরাজ্যের পাশাপাশি সত্য আবিস্কারে সংগ্রাম হয়ে উঠেছে নাট্য- চিন্তার মূল প্রতিপাদ্য

নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন, আমিরুল ইসলাম বাবু, আমিনুল ইসলাম লিটন, আনোয়ার হোসেন রনি, নয়ন তালুকদার, বাপ্পী ত্রিবেদী, মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী, প্রশান্ত দে প্রলয়, অরিন্দম দত্ত চন্দন, রোহেনা সুলতানা, সৈয়দ ফয়সল আহমেদ, প্রিতুল দে, নীলাঞ্জন দাশ টুকু।

১৭দিন ব্যাপী এই নাট্য প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে সিলেটের ১৬টি নাট্যদল। নাট্যপ্রদর্শনী উপলক্ষে সিলেটের নাট্যামোদী দর্শকের উপস্থিতি ও উৎসাহ এযাবতকালের সর্ববৃহৎ নাট্যপ্রদর্শনীকে প্রাণবন্ত করে তুলছে।

আজ শুক্রবার ১৭দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের ১৪ তম দিনে নাট্যায়ন, সিলেট মঞ্চস্থ করবে ‘স্বপ্নলোকের চাবি’। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মঞ্চে নাটক মঞ্চায়িত হবে। নাটকের প্রবেশপত্র হল কাউন্টারে বিকেল ৫টা থেকে পাওয়া যাবে। ১৭ দিনব্যাপী নাট্য প্রদর্শনীতে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সিলেট সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ, সিলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত