শাবি প্রতিনিধি

০৪ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:৪৯

এদেশে লেখালেখি অপরাধ, খুন করা অপরাধ নয়: জাফর ইকবাল

জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল বলেছেন, ব্লগার ও প্রকাশক হত্যায় জড়িতদের আটক করতে সরকার আন্তরিক নয়। সরকার আন্তরিক হলে এ ধরনের ঘটনা কখনোই ঘটত না।

তিনি বলেন, অভিজিৎ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যেসব ব্লগার-লেখক খুন হয়েছেন তাদের হত্যাকারীদের এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতেই বুঝা যায় সরকার আন্তিরক নয়।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, যারা খুন হচ্ছেন তারা ব্লগার। এদেশে ব্লগার শব্দটি একটি অভিশপ্তে শব্দে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা ছিলো না। ব্লগার মানেই এখন নাস্তিক। তাই সরকার ব্লগার হত্যাকারীদের ধরতে চায় না।

কিন্তু এই দেশ তো সকলের। নাস্তিকদেরও। নাস্তিক হওয়া যদি অপরাধ হয় সে শাস্তি সৃষ্টিকর্তা দেবেন। অন্য কারো এ জন্য শাস্তি দেওয়ার অধিকার নেই।

বুধবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা এবং আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল, ব্লগার রণদীপম বসু ও কবি তারেক রহিমকে হত্যাচেষ্ঠার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, জঙ্গী, মৌলবাদীরা সব জায়গায় হত্যা করছে, এদেশেও হত্যা করছে। কিন্তু বুঝতে পারি, এরা এসব কাজ করবেই। যে জিনিসটা আমরা বুঝতে পারি না, সেটা হলো সরকার এদের ধরার ব্যাপারে আন্তরিক নয়। কোনো সরকার এদের ধরতে চায় না। সরকার যদি আন্তরিক হতো তাদের ধরতে পারতো।

তিনি বলেন, একই দিনে একই কায়দায় দু'জন প্রকাশকের উপর হামলা করা হলো। অথচ সরকার বলে এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা কিভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। তাহলে আমি হয়তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা মানে জানি না।

জাফর ইকবাল বলেন, একটা হত্যাকান্ড ঘটলেই সরকারের প্রধান কাজ হলো উপদেশ দেওয়া। যারা লেখালেখি করে তাদের উপদেশ দেওয়া হয়। যেনো এদেশে লেখালেখি করা অপরাধ কিন্তু খুন করা অপরাধ নয়।

জাফর ইকবাল প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?

সমাবেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক ড. মো. ইউনুছ, অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. দ্বীপেন দেবনাথ, অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান।

সমাবেশের আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’র ব্যানারে একটি প্রতিবাদ র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে এসে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩১ অক্টোবর) জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা করে সন্ত্রসীরা। একই দিনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল, ব্লগার রণদীপম বসু ও কবি তারেক রহিমের উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত