সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২০:৫৩

জাহাঙ্গীরনগরে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত

ভর্তি ফি সংক্রান্ত ছাত্র আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

আগামী রবিবার বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে সভার পর ভর্তি কার্যক্রম শুরুর দিনক্ষণ পুনঃনির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

বিভাগীয় পর্যায়ে 'বড় অঙ্কের' উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট 'প্রগতিশীল ছাত্রজোট" সকাল থেকেই অগ্রণী ব্যাংকের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অবরোধ করে রাখে। টাকা জমা দিতে না পারায় শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি হতে না পেরে ফিরে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মোহাম্মদ আলী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেও সরাতে না পেরে ফিরে যান। প্রশাসন দফায় দফায় মিটিং করেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি। অবরোধ তুলে নিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করলে তারা এতে অস্বীকৃতি জানান।

এদিকে 'বড় অঙ্কের' ফি সম্পূর্ণ বাতিল করা না হলে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে যাওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। শুক্র ও শনিবার দুইদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে বলে রবিবার পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

আন্দোলনকারী এবং ভর্তি হতে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর বিভাগগুলো নিজেদের ইচ্ছামত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি’র বাইরে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ নামে একটি অতিরিক্ত ফি আদায় করে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো রশিদেও এ টাকা নেয়া হয় না। এ সব বিষয়ে বিগত কয়েক বছর বাম ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। শেষ পর্যন্ত বুধবার বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, ৭৩’র অ্যাক্ট অনুযায়ী কোনো রশিদ ব্যতিত টাকা আদায় করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি’র বাইরে বিভাগগুলো নিজেদের খেয়াল খুশি মত এই ফি আদায় করছে। "বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় এ ধরনের অনৈতিক কাজ চলতে দেয়া হবে না। উন্নয়ন ফি বাতিল না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে কোন কোন ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। "আগামী রবিবার বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে বিভাগ উন্নায়ন ফি’র বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে ভর্তির সময়সূচি প্রকাশ করা হবে"।

এদিকে আন্দোলনকারীরা এও বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি থেকে আয়ের যে ৪০% টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেওয়ার যে নির্দেশনা ইউজিসির রয়েছে সেটি কার্যকর করা হলেই এভাবে অবৈধভাবে উন্নয়ন ফি আদায় বন্ধ হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ টাকা কোষাগারে জমা না দিয়ে প্রতিবছর নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ার করে নিয়ে নেন। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।"

আপনার মন্তব্য

আলোচিত