নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ জুন, ২০১৭ ০১:৫৭

মদন মোহন কলেজের শত কোটি টাকার সম্পদ সরকারের কাছে হস্তান্তর

মদনমোহন কলেজের সরকারীকরন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কলেজের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি সরকারের কাছে হস্তান্তর উপলক্ষে ডিড্ অব গিফট নিবন্ধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী ও কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতি আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  অর্থমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে এই কলেজের সকল দায়িত্ব সরকারের কাছে দেওয়া হলো। আশকরছি অতি শিঘ্রই কলেজ সরকারিকরণ প্রক্রিয়া সমাপ্ত হবে। সরকারী করণ সমাপ্তের পর কলেজটি দৃষ্টি নন্দন ভবন নির্মণ করা হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। যাতে পুরনো মোহীনি ভবন ও যোগেন্দ্র মোহন ভবনের স্থলে অডিটোরিয়ামসহ আনুষাঙ্গিক সুযোগ সুবিধাসহ দুটি দশতলা ভবন নির্মাণে শিক্ষাপ্রকৌশলের অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রকল্প তৈরি করবেন।

অর্থমন্ত্রী জানান, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কলেজের স্থাপনা বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থসহ ৮৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার ৪০৯ টাকা ৭৪ পয়সা এবং দখলি ভূমির বাজার মূল্যসহ যুক্ত করে ১০০ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সরকারের কাছে হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে,  ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি মদন মোহন কলেজের দুই দিন ব্যাপী ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় অনেকের দাবীর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, যেখানে অর্থমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী আছেন সেখানে এ কলেজকে সরকারিকরণ করতে কোন অসুবিধা নেই। প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন সরকার প্রত্যেক উপজেলার একটি কলেজ ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অচিরেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তখনকার ঘোষণা বর্তমানে বাস্তবায়ন হচ্ছে। পরে শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাগণ মদনমোহন কলেজ পরিদর্শণ করেন। তারপর জাতীয় পর্যায়ে কলেজ সরকারীকরণের তালিকায় মদনমোহন কলেজের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়।

১৯৪০ সালের জানুয়ারি থেকে সিলেট শহরের লামাবাজারে এক বিঘা জমির উপর মদনমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহিনীমোহন দাস ও গোপেন্দ্র মোহন দাস। তারা তাদের পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে ১ বিঘা জমি ও নগদ বারো হাজার টাকার ওপর পিতা মদনমোহন দাসের নামে ১৯৪০ সালের জানুয়ারিতে মদন মোহন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ সালের ১৫ জুলাই কলেজ এর নামে ভূমির দলিল ও নগদ টাকা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পাদিত হয়। মদনমোহন কলেজ অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার পর বর্তমানে এই পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে। এ কলেজে বর্তমানে ৯ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বর্তমানে এ কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ করা যাবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা এ কলেজ থেকে জ্ঞান অর্জন ও ডিগ্রী গ্রহণ করেছেন।

২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ও কলেজের প্রাক্তন ছাত্র বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় তিনি এ কলেজকে সরকারীকরনের আশ্বাসের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

ডিড্ অব গিফট নিবন্ধন অনুষ্ঠান উপস্থিত ছিলেন মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ওকলেজের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা কর্মচারিরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত