ফরিদ আহমেদ

১৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ১৩:১৭

আল মাহমুদ কি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন?

কবি আল মাহমুদের জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিন এলেই তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা কবি বলে সম্বোধন করার একটা বাতিক দেখা দেয় অনেক মানুষের মধ্যে। একাত্তরে সীমান্ত অতিক্রম করে ওইপারে যাওয়া মানেই যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা নয়, সেই সহজ বিষয়টা অনেকেই বুঝতে চান না। এটা হলে যে এক কোটি লোক শরণার্থী হিসাবে ভারতে গিয়েছিলো তাদের সবাইকেই মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দেওয়া হতো।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা কী ছিলো, সেটা তিনি তাঁর আত্মজীবনীতেও লিখেছেন।

একাত্তর সালে সীমান্ত অতিক্রম করে কোলকাতায় গিয়েছিলেন কবি আল মাহমুদ, সেখানে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, এই ধরনের প্রচারণা অনেকদিন থেকেই রয়েছে। এটা যে শুধু তাঁর ভক্ত-অনুরাগীরাই অন্যেরাই বলেছে, তা নয়, তিনি নিজেও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে দাবি করেছেন। ২০০৮ সালে ব্রাত্য রাইসু এবং রাজু আলাউদ্দিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘একমাত্র আমি ছাড়া কোনো মুক্তিযোদ্ধা লেখক বাংলাদেশে নাই।' তাঁর নিজের লেখা আত্মজীবনী 'বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ' বইতেও একাধিকবার তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন।

দুই হাজার নয় সালের ডিসেম্বর মাসে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ নামের একটা সংগঠন কবি আল মাহমুদকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সম্মাননা দেয়। এ প্রসঙ্গে তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘এর মধ্যে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ পরিষদের আহবানে তাদের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম হলভর্তি মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ ঘটেছে। আমাকে দেখে তারা আনন্দ প্রকাশ করলেন, সম্ভবত মুক্তিযোদ্ধাদের দলিল-দস্তাবেজে আমার নাম খুঁজে পেয়েছেন এবং এ জন্যই আমাকে দেখে তাদের আনন্দ।'

তাঁর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের ঝামেলার এটা একটা অন্যতম জায়গা। এই জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদটা জামায়াতে ইসলামীর একটা সংগঠন। একজন মুক্তিযোদ্ধা কবি জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠনের দেওয়া সম্মাননা নেবেন কেন? জামায়াতে ইসলামী একাত্তরের শুধু অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, তা নয়। তারা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে এবং সশস্ত্র উপায়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দিনের পর দিন তারা মদদ দিয়েছে। একই সাথে অস্ত্র হাতে নিজেরাও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের হত্যা করেছে। রাজাকার, আল বদর, আল শামস নামের সব কুখ্যাত মিলিশিয়া বাহিনী তারা তৈরি করেছিলো বাঙালিদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করার জন্য।

কবি আল মাহমুদ যে এদের দেওয়া সম্মাননাই গ্রহণ করেছেন তাই নয়, তিনি এক পর্যায়ে গিয়ে এদের সাথেই দহরম মহরম করেছেন। তিনি জামায়াতের মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামে নিয়মিত লিখতেন। জামায়াতপন্থীদের সভা-সমিতিতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকতেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা কবির কাছ থেকে এই ধরনের স্খলন আশা করা যায় না। স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসে, আদৌ কি তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? কিংবা কোনো অবদান রেখেছেন মুক্তিযুদ্ধে?

এই প্রশ্নের মীমাংসা অবশ্য কবি আল মাহমুদ নিজেই করে দিয়েছেন। তাঁর আত্মজীবনী 'বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ' – এ তিনি তাঁর একাত্তর সালের কোলকাতা জীবন নিয়ে লিখেছেন। ফলে, অন্যের মুখে ঝোল না খেয়ে আমরা সহজে সেখান থেকে জানতে পারি একাত্তরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কোন ভূমিকাটা পালন করেছেন।

পঁচিশে মার্চের রাতে পাকিস্তান বাহিনী যখন তাদের সমস্ত নৃশংসতা নিয়ে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আল মাহমুদ তখন সপরিবারে ঢাকায় বসবাস করতেন। চাকরি করতেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। পঁচিশে মার্চ রাতেই ইত্তেফাক ভবন আগুনে পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তান আর্মি।

কয়েকদিন এদিক ওদিক লুকিয়ে থেকে শেষে একদিন সপরিবারে তিনি গ্রামের দিকে পালান। রায়পুরা থানার নারায়ণপুর গ্রামে আশ্রয় নেন। তাঁর সাথে তাঁর বোন লাইলি, লাইলির স্বামী রাজ্জাকসহ অন্যেরাও ছিলো। এই জায়গাটা নিরাপদ জায়গা ছিলো। কারণ, পাক বাহিনীর জন্য দুর্গম আর ঝুঁকিবহুল ছিলো এই এলাকা। ফলে, অল্পদিনের মধ্যেই এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগোনা শুরু হয়।

এখানে আপাতত নিরাপদে থাকলেও তাঁর মধ্যে দেশত্যাগ করে চলে যাবার একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। এর জন্য দায়ী ছিলো তাঁর খালাতো বোন পারুল আর তাঁর স্বামী হোসেন তৌফিক ইমাম। তৌফিক ইমাম (এইচটি ইমাম)সেই সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথেই তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা চলে যান। যাবার আগে অবশ্য তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের ট্রেজারির সব টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন সাথে করে। এই টাকাটা তিনি পরে হস্তান্তর করে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের কাছে। তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে প্রবাসী সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলা হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। মুজিবনগর সরকারের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ছিলেন তিনি।

তৌফিক ইমাম সাহেব এক পর্যায়ে আগরতলা থেকে আল মাহমুদকে সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য সংবাদ পাঠালেন। সেটা পেয়েই কিছু মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে সীমান্ত অতিক্রম করে আগরতলাতে চলে গেলেন আল মাহমুদ। আশ্রয় নিলেন তৌফিক ইমামের বাসাতেই।

একাত্তর সালে যাঁরা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে গিয়েছিলো, তাঁরা মূলত দু'টো কারণে গিয়েছিলো। প্রথম কারণ হচ্ছে দেশের ভিতরের অনিরাপদ পরিবেশ। জান বাঁচাতে মানুষ তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে দেশ ছেড়ে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া। সেই অংশগ্রহণ যে শুধুমাত্র অস্ত্র হাতে হবে তা নয়। যুদ্ধের বহু সেক্টর থাকে। সেখানে অবদান রাখার জন্যেও বহু লোকে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এই দু'টো কারণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না। অনেকের ক্ষেত্রে দেশ ত্যাগের ক্ষেত্রে দু'টো কারণই এক সাথে কাজ করেছে।

আল মাহমুদের ক্ষেত্রে ঠিক কোন কারণটা সীমান্ত অতিক্রমের পিছনে কাজ করেছে, সেটা বলা মুশকিল, কারণ, তিনি সেটা ব্যাখ্যা করেন নাই। অ-নিরাপত্তা যদি সমস্যা হয়, তবে তিনি সপরিবারেই সীমান্ত পাড়ি দেবার কথা ছিলো। কিন্তু, তিনি সাথে করে তাঁর স্ত্রী কিংবা সন্তান কাউকে নিয়ে যাননি। একাই গিয়েছিলেন। এবং মুক্তিযুদ্ধে পুরো নয়মাস তাঁকে তাঁর স্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো উদ্বিগ্নতা দেখাতে দেখা যায়নি।

আগরতলা থেকে অল্পদিনের মধ্যেই তৌফিক ইমাম সাহেব কোলকাতার দিকে রওনা দেন। সাথে করে নিয়ে যান আল মাহমুদকেও। উডস্ট্রিটের একটা হোটেলে ওঠেন তাঁরা। পথে বের হলে হারিয়ে যাবেন, এই ভয়ে তিনি হোটেল থেকেই বের হতেন না। উডস্ট্রিটের হোটেল থেকে পরে তৌফিক ইমাম সাহেব চলে যান পার্ক সার্কাসের এক বাসায়। আল মাহমুদও তাঁদের সঙ্গী হন। এখানে এসেও তিনি ঘরবন্দি হয়ে থাকতেন। শেষে তৌফিক ইমাম একদিন এসে তাঁকে বলেন, 'ঘরে বসে থাকলে চলে? আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ করতে যান?’ তৌফিক ইমাম সাহেবের চাপে পড়ে আনন্দবাজার অফিসে যান আল মাহমুদ। দেখা করেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সাথে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশের অবস্থা জানতে চান। তিনি তাঁদের কাছে তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। আল মাহমুদের ধারণা হচ্ছে, আনন্দবাজারের লেখকগোষ্ঠী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ ঘোষ, সন্তোষ দত্ত এবং নীরেন্দ্র চক্রবর্তীর পরবর্তী লেখালেখিতে তাঁর দেওয়া মুক্তিযুদ্ধকালীন বিবরণই প্রতিফলিত হয়েছে। ভাবটা এমন যে এঁরা বাংলাদেশের বিষয়ে কিছুই জানতো না, অন্য কারো সাথে তাঁরা আলাপও করেন নাই। আল মাহমুদ যাবার পরেই সব তথ্য তাঁরা জানতে পেরেছেন।

কোলকাতায় তখন নকশালবাদী আন্দোলন চলছে। নিরাপদে চলাচলের জন্য পরিচয়পত্র দরকার। তৌফিক ইমাম সাহেব তাঁর প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল অফিসের স্টাফ হিসাবে তাঁর নাম ঢুকিয়ে দেন এবং তাঁকে একটা পরিচয়পত্র দেন। পরিচয়পত্রটা দেওয়ার মূল কারণ ছিলো অফিসের স্টাফ হিসাবে তাঁর নাম তোলার জন্য শুধু। কোনো সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি তখন। যদিও তিনি নিজে নিজে ভেবে নিয়েছিলেন যে কোলকাতার লেখক, শিল্পী ও সাহিত্যিকদের মধ্যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন জোগানের কাজ করে চলেছিলেন। ঘটনা হচ্ছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোলকাতার প্রায় শতভাগ লেখক, শিল্পী এবং সাহিত্যিকই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জোর সমর্থন দিয়েছিলেন। ফলে, তিনি কাদের উপরে তাঁর মোটিভেশনাল ওয়ার্ক করছিলেন, সেটা আর জানা যায়নি।

সেই পরিচয়পত্র নিয়ে তিনি কোলকাতা জানার জন্য ঘোরাঘুরি শুরু করেন। এই ঘোরাঘুরির জন্য তিনি সঙ্গীও পেয়ে যান। সেটা হচ্ছে কবিতা সিংহের মেয়ে রাজেশ্বরী রায় চৌধুরী। আল মাহমুদ তাঁকে রাজু বলে ডাকতেন। এই মেয়েটার সাথে তাঁর একটা হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর টানে কখনো কখনো তিনি কবিতা সিংহের বাড়িতে গিয়ে এক সপ্তাহও কাটিয়ে আসতেন। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ কানাঘুষাও শুরু হয়েছিলো। একদিন রাজু হুট করে পার্ক সার্কাসের বাসাতে গিয়েও হাজির হয়। আল মাহমুদের খালাতো বোন পারুল রাজুকে আপ্যায়ন করলেও, আল মাহমুদকে সতর্ক করে দিলেন তিনি। বললেন, ‘বাংলাদেশে আপনার সবচেয়ে আপনজন যিনি আমাদের ভাবী তার কথা কখনও ভুলবেন না। তার অপমান হয় এমন কোনো কাজ করবেন না।'

পারুলের এই সতর্কতাতে খুব একটা কাজ হয়নি। তিনি তাঁর ঘোরাঘুরি অব্যাহত রাখেন। রঙ চঙের পোশাক পরে কফি হাউজে গিয়ে আড্ডা দিতেন, বিলাসী জীবন যাপন করতেন। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের কাহিনি এক পত্রিকাতেও ছাপা হয়ে গেলো। বলা হলো যে তিনি ভিআইপিদের মতো পোশাক পরে কফি হাউজে ঘোরাফেরা করেন।

লেখক, সাংবাদিক বা শিল্পীরা যাঁরা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কোলকাতা গিয়েছিলেন, এদের একটা বড় অংশই কাজ করতেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। আল মাহমুদ সাহেবও মাঝে মধ্যেও ওখানে ঢু মারতেন। কিন্তু, রেডিও-র কোনো প্রোগ্রামে অংশ নিতেন না। তাঁর পরিবার পরিজন বাংলাদেশে অনিশ্চিত অবস্থায় কাল কাটাচ্ছে, কাজেই তিনি রেডিও-তে প্রোগ্রাম করলে তারা বিপদে পড়তে পারে, এটাই ছিলো তাঁর ভয়। ভয়টা যৌক্তিক। কিন্তু, কথা হচ্ছে বাকি যাঁরা ওখানে কাজ করছিলেন, তাঁদের অবস্থাও তাঁর মতোই ছিলো। সেই ভয়টাকে মাথায় নিয়েই তাঁরা কাজ করছিলেন। এ ছাড়া ওখানে ছদ্মনামেও কাজ করার সুযোগ ছিলো। অনেকেই দেশে আত্মীয়স্বজনদের নিরাপদে রাখতে ছদ্মনাম ব্যবহার করে অনুষ্ঠান করতেন।

তো, তাহলে উনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য কী করলেন? একবার শুধু কুষ্টিয়াতে একটা মুক্তিযুদ্ধ শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেটাও নিছক কৌতূহলের বশে। সেখানে গিয়ে কোনো কাজ তিনি করেন নাই। আনন্দবাজারের লেখক গোষ্ঠীর সাথে আড্ডা দেওয়া, রাজেশ্বরী রায় চৌধুরীকে বগলদাবা করে কোলকাতা ঘোরা আর দামী পোশাক পরে কফি হাউজে গিয়ে নিজেকে প্রদর্শন ছাড়া আর কোনো কাজ তিনি করেন নাই।

আর একটা কাজ তিনি করেছেন, সেটা হচ্ছে মাঝে মধ্যে তীব্র হতাশায় ভুগেছেন। মানসিক শৈথিল্যতা দেখা দিয়েছে তাঁর মধ্যে। দেখা দিয়েছে কেমন একটা গাছাড়া ভাব।

পাঠক হয়তো এটা শুনে ভাবতে পারেন তিনি বোধহয় মানসিক বৈকল্যের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন মানসিক চাপে থাকতে থাকতে। এই মানসিক শৈথিল্যতা কী নিয়ে ছিলো, সেটা বোঝা যায় তাঁর নিজের ভাষ্য থেকেই। তিনি লিখেছেন, ‘আমি মনেপ্রাণে আল্লাহর কাছে যৌনসংযম প্রার্থনা করতাম।' বোঝাই যাচ্ছে, তীব্র যৌন চাহিদাই ছিলো মূলত তাঁর মানসিক শিথিলতা।

অথচ, তিনি যে অফিসের মিথ্যা স্টাফ সেজে কোলকাতায় অবাধে ঘোরাফেরা করতেন, সেই অফিসেরই মূল ব্যক্তিটি স্ত্রী এবং সন্তানদের ভিন্ন একটা বাড়িতে রেখে একাকী জীবন কাটাতেন। নিঃসঙ্গতার লোভে নয়, দেশের জন্য কাজ করার তাড়নায়। সামান্য কিছু সময় ঘুম বাদ দিয়ে, বাকি সময়টা দেশ স্বাধীন করার জন্য নিরলস পরিশ্রমে কাটতো তাঁর।

ফরিদ আহমেদ: কানাডা প্রবাসী লেখক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত