০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:৪৬
আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে আপামর জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বিশ্ববাসীর কাছে ছিলো এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তারপরেও কিছু ঘৃণিত বেঈমান, কুলাঙার বাঙালি ছিল- যারা মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। শুধু বিরোধিতা করেই চুপ থাকেনি, তাঁরা নির্বিচারে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণকে হত্যা করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্যাতন করেছে, লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। এইসব বেঈমান, মীরজাফর, রাজাকারদের বিচার দেরীতে হলেও করা হচ্ছে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এই সব রাজাকারদের বিচারের রায় কার্যকর করায় উৎফুল্ল, আনন্দিত।
আমরা জানি, যেসব শীর্ষ পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধীরা ধরা পড়েছে, বিচার হয়েছে, রায় কার্যকর করা হয়েছে, তারাই শুধুমাত্র দেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেনি, তারাই কেবল মানুষ হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন করেনি, তাদের সাথে আরো অনেক রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ ঘাতক আছে, যাদেরকে আমরা বিচারের আওতায় এখনো আনতে পারিনি। প্রকৃতির নিয়মেই প্রতিদিনই যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত অনেকেই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ দেশের বাইরে, কেউ দেশের ভেতরে। যারা যে ধর্মের সেই ধর্মের নিয়মেই শেষকৃত্য সম্পাদন হচ্ছে। মুসলমান হলে তাদেরকে কবরস্থানে ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে দাফন কার্য শেষ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- যে মাটিতে মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ঘুমিয়ে আছেন, সেই মাটিতে কিভাবে যুদ্ধাপরাধীর কবর হবে?
ধর্মীয় সহানুভূতির আড়ালে এই সব যুদ্ধাপরাধীরা নীরবে, কখনো কখনো বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের পাশে শায়িত হচ্ছে। একজন যুদ্ধাপরাধী কোনভাবেই একজন মুক্তিযোদ্ধার পাশে শায়িত হতে পারে না, হলে সেটা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অপমান প্রদর্শিত হয় বলেই আমার ধারণা!
আমি সরকারের কাছে বিশেষ করে স্বাধীনতা স্বপক্ষের সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, সরকার যেন যুদ্ধাপরাধীদের জন্য পৃথক একটা কবরস্থান নির্ধারণ করে দেন। সেখানেই যেন সব যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসরদেরকে শায়িত করা হয়। ইতিমধ্যে যারা মারা গেছে বা বিচারের আওতায় দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে- তাদের কবর এই বিশেষ কবরস্থানে প্রতিস্থাপন করা হোক।
এই দাবির সমর্থনে কিছু যুক্তি নিচে তুলে ধরলাম:
যুদ্ধাপরাধীরা এদেশের কলঙ্ক। কলঙ্কিত এসব যুদ্ধাপরাধীরা কোনভাবেই যেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য, জাতীয়ভাবে সমাদৃত কবরস্থানগুলোতে স্থান না পায়। ওদের জন্য অতি দ্রুত একটি কবরস্থান তৈরি করা হোক এবং নাম দেয়া হোক "যুদ্ধাপরাধী কবরস্থান”।
আসুন, যুদ্ধাপরাধীদের জন্য আলাদা কবরস্থানের দাবিতে সোচ্চার হই।
মাসুদ আরিয়ান : অনলাইন একটিভিস্ট।
আপনার মন্তব্য