আবু নাসের আব্দুল হাই ছিদ্দেকী

১৮ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:৩৫

ভারতে বাড়ছে উচ্চশিক্ষিতের হার, বাড়ছে বেকারত্বও

ছবি: প্রতীকী

অর্থনৈতিক মন্দা চলছে ভারতে। নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দেশটির আর্থিক বৃদ্ধির হার কমছে। ভারতে ২০১৭-১৮ সালে দেশে বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ, যা গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের সমীক্ষায় সামনে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা কর্মসংস্থানের তথ্য এবং পরিসংখ্যান সংক্রান্ত সমীক্ষার ‘গোপন’ রিপোর্ট পাওয়ার দাবি করে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজারে আর্থিক মন্দার কারণেই এই বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে জিএসটি ও নোট বাতিলের জেরে অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে বিশাল ক্ষতি হয়েছে, তার প্রভাব ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থের জোগান নেই, ফলে বাজারে চাহিদা নেই। আর চাহিদা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন কমাতে হচ্ছে বড় বড় সংস্থাকে। যার কারণে চাকরি হারাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যদিও বেকারত্ব একটি দেশের জন্য অনেক বড় সমস্যা তারপরেও ভারতের সরকার এ সমস্যা সমাধানে নগণ্য ভূমিকা পালন করছে।

অন্যদিকে ‘সেন্টার ফর সাস্টেনেবল এমপ্লয়মেন্ট’ শিরোনামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এ গবেষণায় সন্তোষ মেলহোত্রা ও যজাতি কে পারিদা নামের দুই নামী অর্থনীতিবিদ জানান, ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত দেশের প্রায় ৯০ লাখ মানুষের ইনকামের সুযোগ কমেছে। এ বেকারত্বের জন্য ইউপিএ সরকারের আমলের শেষ তিন বছর এবং মোদি সরকারের প্রথম চার বছর এর জন্য সমানভাবে দায়ী।

দেশে উচ্চশিক্ষিতের হার বাড়ছে স্পুটনিক গতিতে। একইসঙ্গে বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। নেই চাকরি, নেই অর্থের সংস্থান, নেই জীবনধারণের বিকল্প পথ। বেকারত্বের থাবা দেশকে করে তুলেছে কঙ্কালসার। শিক্ষিত হয়েও নেই চাকরি। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির কারণেই বেকারত্বের ওপর প্রভাব পড়ছে। শুধু সংগঠিত নয়, অসংগঠিত কাজের ক্ষেত্রেও মানুষের সমস্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে। যেহেতু, অর্থনীতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তাই বেকারত্ব নিয়েও সমস্যার কোনও সমাধান এখন হওয়া সম্ভব নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত চার মাসে বেকারত্বের হার ৭.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়, উচ্চ শিক্ষিতদের বেকারত্বের হার বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আর তাই বাধ্য হয়ে নানা অসামাজিক কাজে নামছে যুবসমাজ। আর এই কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সামনে এসে পড়েছে বেকারত্বের বেআবরু চেহারা। চাকরির অভাবে শিক্ষিত বেকাররা নামছেন অবৈধ কাজে। বিসর্জন দিতে বাধ্য হচ্ছেন নৈতিকতা। আর তারই মধ্যে জন্ম নিয়েছে এক অসহায় প্রশ্ন, "চাকরি নেই, কী করবো?"

পড়াশুনা শিখেছেন, অথচ চাকরি নেই। এলাকায় না আছে কোনো কারখানা, না আছে রোজগারের কোনো উপায়।

এ দায় কার? চাকরিহীন বেকার যুবকদের? না কি সরকারের; যে সরকারের অক্ষম শরীর কেবলই বহন করে আন্দোলন-বিক্ষোভের গ্লানি। প্রশ্ন তুলছেন দেশের মানুষ!

                  আবু নাসের আব্দুল হাই ছিদ্দেকী: বছলা, করিমগঞ্জ, আসাম

আপনার মন্তব্য

আলোচিত