খলিল রহমান

২৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:৩৪

করোনা আমার অইত খেনে?

সুনামগঞ্জে আজ নতুন করে আরও চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এটা নিশ্চয়ই আপনি জেনে গেছেন। এর মধ্যে একজন নারী।

পত্রিকায় রিপোর্ট পাঠাতে হবে। এ কারণে আক্রান্ত চারজনের এক তরুণকে সকালে ফোন দিলাম। ফোন ধরলেন তার ফুফু। জানতে চাইলাম তিনি কই।

ফুফুর উত্তর: হে ত বাজারও গেছে।

-বাজারও! তার কোনো সমস্যা নাই?

ফুফু: না বেটা। হে ত ভালা। আমরা ১৩ জন নারাইনগঞ্জ কামও আছলাম। গত বৃহস্পতিবার আইছি। তিন-চারদিন আগে তার জ্বর অইছিল। ডাক্তার দেখাইয়া ভালা অইছে। হি দিন বুলে তার রক্ত নিছল। আজকু সকাল থাকি খালি ফোন ফাইরামরে বাবা। এর কোনতা অইছে না কি-তা বেটা।

দ্বিতীয় ব্যক্তির কাছে ফোন করতেই তিনি জানালেন সিলেটে আছেন। ওই ব্যক্তির মূল বাড়ি রংপুরে। চাকরির কারণে আছেন সুনামগঞ্জে।

আপনি না করোনা আক্রান্ত। সিলেটে কী করছেন?

বিজ্ঞাপন

-না না, আমার তো এমনিতে কোনো সমস্যা নেই। গত ১৯ তারিখে সামান্য জ্বর হওয়ার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি। ওষুধ খেয়ে এখন ভালো আছি। সেদিন পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলাম। এখন জ্বরটর কিচ্ছু নেই। আজ সকালে ফোন করে বলছে আমার কারোনা পজিটিভ। তাই আবার পরীক্ষা করানোর জন্য সিলেটে এসেছি।

আবার পরীক্ষা?

-তারাই বলছে, চাইলে আবার পরীক্ষা করতে পারি। মনের সন্দেহ দূর করতে।

- লকডাউনের মধ্যে গেলেন কীভাবে ভাই?

-আসছি এক রকম আরকি। আসা যায় তো।

তৃতীয় তরুণ ছিলেন কিশোরগঞ্জে। কাজ করতেন একটি মিষ্টির দোকানে। বাড়িতে এসেছেন ১৭ মার্চ। আসার সময় হবিগঞ্জে এক আত্মীয় বাড়িতে থেকে এসেছেন আরও দুইদিন। এখন বাড়িতেই আছেন। কোনো উপসর্গ নেই। তবে তিনি আক্রান্ত। হাট-বাজারে ঘুরেছেন অবাধে।

যে নারী আক্রান্ত হয়েছেন তিনি হাসপাতালে গিয়েছেন তার এক আত্মীয় রোগীকে নিয়ে। অনেকটা শখের বসে নমুনা দিয়েছিলেন। এক স্বাস্থ্যকর্মী জানালেন ওই নারী নাকি এখন বলছেন,‘আমি ত বাড়িত আছলাম। গ্রামও থাকি। একদিন খালি হাসপাতালও গেছলাম। আমার অইত খেনে।’

খলিল রহমান: লেখক, সাংবাদিক

আপনার মন্তব্য

আলোচিত