১২ মে, ২০২০ ০৪:৩০
গতানুগতিক লকডাউন এড়িয়ে, বেশ কিছু দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম, এমনকি রাজনীতির টেবিলেও সম্প্রতি বারবার উঠে আসছে সুইডিশ মডেলের কথা। যদিও সুইডেনের কোন রাষ্ট্রীয় মাধ্যমে বিশেষ কোন মডেলের কথা উল্লেখ করা হয় নি, লকডাউনের বিকল্প হিসেবেই সুইডেনের স্বতন্ত্র জনস্বাস্থ্য নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে এই মাতামাতি। এমনকি গত ২৯শে এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সমাবেশে মহাসচিব তেদ্রোস সুইডেনের এই কোভিডনীতিকে আগামীদিনের ব্যবস্থা তথা এক্সিটপ্ল্যান বলে অভিহিত করেন। কি এই সুইডিশ স্ট্র্যাটেজি? আদৌ কতটুকু কার্যকর এই ব্যবস্থা আর আমাদের বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কতটুকুই বা সামঞ্জস্যকর এ মডেল? এসব নিয়েই আমার আজকের বাক-বচসা।
বিজ্ঞাপন
প্রথমেই সংক্ষেপে সুইডেনের করোনানীতির হালনামা দেখে নেই। তাত্ত্বিকভাবে সুইডেনের কোভিডনীতি তাদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যগত দর্শনের উপর স্থাপিত। সরকার প্রধান স্টেফান লফভেনের পূর্ণ আস্থায় সুইডিশ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রধান এপিডেমিওলজিস্ট ট্যাগনেল রয়েছেন নীতিনির্ধারণের ফ্রন্টলাইনে, যার অনেকটাই নাগরিকদের প্রতি আস্থাকে কেন্দ্র করে, কঠোরতা বিবর্জিত। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রথম কেস, তার এক মাস পরে দ্বিতীয় কেস ধরা পড়লেও, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ইতালিফেরত স্কি-প্রেমীদের প্রত্যাবর্তনে হুহু করে বাড়তে থাকে উত্তর গোলার্ধের দেশটির করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। এমতাবস্থায়, মধ্যমার্চে প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফভেন দেশের উদ্দেশ্যে খুব সহজ একটা আহবান জানান– “নিজ নিজ অবস্থা থেকে স্বীয় দায়িত্ব তুলে নিন।“ সাথে সাথেই আরোপিত হয় তথাকথিত সুইডিশ মডেল, সীমিত করা হয় গণজমায়েত, দুই মিটারের দূরত্ব বজায় রাখা, অত্যাবশ্যকীয় সেবা ছাড়া বাকিদের বাসা থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়, হাইস্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইন করা হয়, রেস্তোরাঁগুলোর অনেকেই নিজেদের সেবা ছোট করে দেয় এবং শক্ত স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করা হয়। তবে সরকারের মূল লক্ষ্য ছিলো রোগের গতিকে শিথিল করে দেয়া যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে না পড়ে। সে লক্ষ্যে স্বাস্থ্যখাতকে প্রস্তুত করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীদের নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়, যা পরের আলোচনায় আসবে।