বিনোদন ডেস্ক

০১ মার্চ, ২০১৬ ২৩:২০

অস্কার জিতেও পাকিস্তানিদের ক্ষোভের মুখে শারমিন

অনার কিলিং বা পারিবারিক সম্মানের জন্য হত্যাকে বিষয়বস্তু করে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে অস্কার জয় করেছেন পাকিস্তানি নারী চলচ্চিত্রকার শারমিন ওবায়েদ-চিনয়। চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারটি জিতলেও জিততে পারেননি দেশবাসীর হৃদয়। প্রচুর প্রশংসা পেলেও অনেক পাকিস্তানিই শারমিনকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অস্কার পুরস্কার হাতে পেয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে শারমিন বলেন, ‘যখন নারীরা সংগঠিত হয়, তখন এমনটাই ঘটে।’ শারমিন তার নির্মিত ‘আ গার্ল ইন দ্য রিভার: দ্য প্রাইস অব ফরগিভনেস’ উৎসর্গ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে। নওয়াজ অনার কিলিং বন্ধের জন্য আইন প্রণয়ন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন নারীপ্রশ্নে সরব এই নির্মাতা।

কিন্তু আন্তর্জাতিক ও সম্মানজনক এই পুরস্কার তাকে কেবল খ্যাতি ও প্রশংসাই এনে দেয়নি, একই সঙ্গে তিনি শিকার হচ্ছেন কঠোর সমালোচনা ও নিন্দার। টুইটারে চালু হয়েছে #WeDisownSharmeen নামে হ্যাশট্যাগ। তাদের দাবি, পাকিস্তানের অনেক ইতিবাচক দিকও রয়েছে। নেতিবাচক বিষয়গুলো বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে নিজে বিখ্যাত হওয়া ও দেশকে অসম্মান করা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'তিনি পাকিস্তানের অবমাননা করে অস্কার পেয়েছেন।' আরেক পাকিস্তানি লিখেছেন, 'পাকিস্তানের ইতিবাচক দিক দেখিয়ে কেউ পুরস্কার পায় না। নেতিবাচক দিক তুলে ধরলেই আন্তর্জাতিক পুরস্কার জোটে।'  

ইংরেজি ও পাঞ্জাবি ভাষায় নির্মিত ‘অ্যা গার্ল ইন দ্য রিভার: দ্য প্রাইস অব ফরগিভনেস’ এইচবিও চ্যানেলে প্রিমিয়ার হয় গত বছরের ২৮ অক্টোবর। ওইদিনই মুক্তি পায় ৪০ মিনিট ব্যাপ্তির ছবিটি। ছবিটিতে ১৯ বছর বয়সী সাবাকে তুলে ধরা হয়েছে। সে অনার কিলিংয়ের শিকার হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যায়। পছন্দের পুরুষকে বিয়ে করার অপরাধে তাকে মারধর ও গুলি করে নদীতে ফেলা দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তার মাথা হেলে যায়। বুলেট মেয়েটির খুলি উড়িয়ে দেওয়ার বদলে তার গণ্ডদেশে সামান্য আঘাত করেছে কেবল। এ ধরনের হামলার কারণেই মেয়েটি বেঁচে যায়। কিন্তু কেবল বেঁচেই যায় না, সে পুলিশের কাছেও যায়। তবে পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী পরিবারের কোনও নারী সদস্যকে হত্যা করলেও ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষমা পেয়ে যায় পুরুষরা। কোনও বিচারের মুখোমুখি হতে হয় না।

এর আগেও ‘সেভিং ফেস’ নামের একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে অস্কার পেয়েছেন শারমিন। আগের প্রামাণ্যচিত্রের বিষয়বস্তু ছিল ছিল এসিড সন্ত্রাসের শিকার নারী। সূত্র: স্ক্রল ডট ইন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত