সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ নভেম্বর, ২০১৫ ১৬:০২

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপনে চুক্তি সই

পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম একটি বাংলাদেশী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সিস্টেম ক্রয়ের একটি চুক্তি করেছে সরকার। এই স্যাটেলাইটটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।

ফরাসি একটি কোম্পানির সঙ্গে করা চুক্তিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। তবে পুরো প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। সরকারি-বেসরকারি তহবিল ব্যবস্থাপনায় এই অর্থের সংস্থান হবে।

বুধবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের উপস্থিতিতে সব থেকে মর্যাদাপূর্ণ ও অন্যতম বৃহৎ প্রকল্পের জন্য চুক্তি সই হয়।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ ও থ্যালেস এলেনিয়ার চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যঁ লইক গ্যাল (jean loic galle) নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি অনুযায়ী, স্যাটেলাইটের কাঠামো, উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা, ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ভূ-স্তরে দু’টি স্টেশন পরিচালনা ও ঋণের ব্যবস্থা করবে থ্যালেস এলেনিয়া।

বাংলাদেশকে এখন মূলত বিভিন্ন বিদেশী কোম্পানির স্যাটেলাইট ট্রান্সপন্ডার ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করতে হয়।

নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করতে পারবে, সেই সঙ্গে দেশিয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও স্বল্প খরচে স্যাটেলাইট সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপিত হলে দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি স্যাটেলাইটের বর্ধিত ফ্রিকোয়েন্সি ভাড়া দিয়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রাও উপার্জন করা যাবে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতিবছর একশ’ কোটি টাকা ব্যয় হয়, আগামী ৬/৭ বছরের মধ্যে এ ব্যয় উঠে আসবে।

‘ই-লার্নিং, ই-গবেষণা, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগপূর্ণ জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পের জন্য গত ১৫ জানুয়ারি রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ অরবিটাল স্লট লিজ ইন এর ভিত্তিতে ক্রয় করা হয়েছে।

দেশের প্রথম এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ২০১২ সালের ২৯ মার্চ বিটিআরসি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালে’র সঙ্গে পরামর্শক চুক্তি সই হয়।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মূলত একটি সম্প্রচার এবং যোগাযোগ স্যাটেলাইট। বর্তমানে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ১১২কোটি টাকার উপরে প্রতিবছর খরচ করছে। এই পুরো টাকাটাই বিদেশে চলে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির মাধ্যমে এসব সেবা দেয়া যাবে।

পুরো বাংলাদেশই এই স্যাটেলাইটের আওতার মধ্যে আসবে। ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া সহজ হবে। ইন্টারনেট যোগাযোগ আরো সহজ হয়ে উঠবে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত এই স্যাটেলাইটটির আওতা থাকবে। এর মধ্যে অনেক দেশেরই নিজস্ব স্যাটেলাইট নেই। এসব দেশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে পারবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত