সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ নভেম্বর, ২০১৫ ১৪:২৮

ফেসবুক বন্ধ থাকায় বিপাকে একাধিক মন্ত্রী

ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ফেসবুক। তবে পরিচিতির এ গণ্ডি অনেক আগেই ছাড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় মাধ্যমটি। ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসায়িক উদ্যোগ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রচারণারও সুযোগ নিচ্ছেন অনেকেই। দেশেও রাজনীতিবিদদের মধ্যে অনেকেই ফেসবুককেন্দ্রিক জনসংযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সরকার ফেসবুকসহ আরো কয়েকটি যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে।

জানা গেছে, ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা নিয়মিত বিভিন্ন পোস্ট দিতেন। আর এসব পোস্টে স্বল্প সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও উঠে আসত। হালনাগাদ তথ্য দিয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অনেকেই ব্যবহার করেন নিজেদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অথবা পেজ।

ফেসবুকে সক্রিয় এমন মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ বেশ কয়েকজন। আর সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন দিপু মনি, ইসরাফিল আলম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।

এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানসহ সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই নিয়মিত পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে ফেসবুকে বেশ জনপ্রিয়। তবে ফেসবুক বন্ধ থাকায় কেউ কেউ অনিয়মিত পোস্ট দিলেও ১৮ নভেম্বরের পর থেকে নিজেদের অ্যাকাউন্ট বা পেজে নতুন কোনো পোস্ট দিতে দেখা যায়নি মাধ্যমটিতে সরব উপস্থিতি রয়েছে, এমন অনেকেরই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য জানান, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে সরকারি প্রয়াসের অংশ হিসেবে ইন্টারনেটের গ্রাহক বেড়েছে। এ মাধ্যম ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বিপুল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সহজেই নিজেদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম প্রচারণার সুযোগ পাওয়া যায়। তবে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার এটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে ইন্টারনেট সেবার গ্রাহকের উল্লেখযোগ্য অংশই ফেসবুক ব্যবহারকারী। গত অক্টোবর শেষে দেশে ইন্টারনেট সেবার গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৪৬ লাখ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি। তাদের অনেকেই ‘এফ-কমার্স’ হিসেবে প্লাটফর্মটি কাজে লাগান।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশে ১৮ নভেম্বর দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় এ মাধ্যম। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে ফেসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন, ট্যাঙ্গো ও গুগল হ্যাংআউট। এর সবক’টিই ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম। এছাড়া ইউস্ট্রিম ডটটিভি নামের একটি ওয়েবসাইটও বন্ধ রয়েছে। ইন্টারনেটে সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এটি।

এর আগেও একবার ভাইবার, ট্যাঙ্গো, হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন ও মাইপিপল বন্ধ করে দেয়া হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে গত ১৮ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকে এসব অ্যাপ। তারও আগে বিতর্কিত ভিডিও না সরানোয় ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দেশে ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব বন্ধ করেছিল বিটিআরসি। এটি খুলে দেয়া হয় প্রায় নয় মাস পর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত