সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ জুলাই, ২০১৬ ১০:২৮

মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করা যাবে না : মমতা

গুলশান হামলার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দার পাশাপাশি সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতির মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধের বিরোধিতা করে মমতা বলেন, ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করা যাবে না। মৈত্রী এক্সপ্রেস মানে দু’দেশের সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্কের প্রতীক। ওই ট্রেনের সঙ্গে জঙ্গি হানার কোনো সম্পর্ক নেই। যে কোনো মূল্যে ইন্দো-বাংলার প্রগতি ও শান্তি বজায় রাখতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলাদেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকি। ওপার বাংলা খারাপ থাকলে আমরা খারাপ থাকি। কোনো ঘটনায় কোনোভাবে আমরা বাংলাদেশকে যেন দায়ী না করি।’

ঢাকার গুলশানে রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হানার ইস্যুতে এভাবেই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে দু’দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় ও মজবুত করার পক্ষে এদিন সওয়াল করলেন মমতা। দু’দিন আগে কলকাতায় মিছিল করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিধায়ক দিলীপ ঘোষ মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধের দাবি করেছিলেন।

এদিন স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপির সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে সম্প্রীতি ও সুসম্পর্কের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপির রাজ্য সভাপতি এখানে আছেন। আপনি কেন মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করার কথা বলছেন? এটা পুরোপুরি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। মনে রাখতে হবে, এর সঙ্গে দু’দেশের আবেগ জড়িয়ে আছে। আমরা সবাই চাই, ইন্দো-বাংলা সম্পর্ক মজবুত হোক। পুরোহিত-ইমাম কেউই খুন হোক আমরা চাই না। রেস্তোরাঁয় যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক, মর্মান্তিক। নিন্দার কোনো ভাষা নেই। সন্ত্রাসবাদীদের কোনো জাত বা ধর্ম নেই। বিষয়টি নিয়ে কেউ যেন রাজনীতি না করেন। কথায় কথায় কেন সব কিছুতেই এত অসহিষ্ণু হব? প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ খুবই বন্ধু দেশ। কিছু বলতে গেলে দশ বার ভাবতে হয়। চট করে কিছু বলতে পারি না। পরস্পরকে পরস্পরের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। এমন ঘটনায় রাজনীতির ইস্যুকে বাদ দিন। সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিধানসভার লবিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধের কথা বলেছি, কিন্তু করিনি। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মেরেকেটে শেষ করে দিচ্ছে। তাই প্রতিবাদস্বরূপ এসব বলেছি।’

তবে মমতা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে গরু পাচার যে পুরোপুরি বন্ধ করতে চান তা উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনটি বিষয় নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেবই। গরু পাচার, নোট পাচার, আফিম ও সোনার লেনদেন যে কোনো মূল্যে বন্ধ করবই। এক্ষেত্রে কোনো জাতি-সম্প্রদায় ও ধর্ম-বর্ণ দেখব না।’

সীমান্ত-সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এত বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু এখন কাঁটাতারের বেড়া সম্পূর্ণ দেয়া গেল না। কেন্দ্রের হাতেই তো বিএসএফ, সিআইএসএফ। তবু বাংলাদেশের রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার পর আমরা নজর রেখেছিলাম। সীমান্ত এলাকায় পুলিশ পাঠিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ও পুলিশ যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে।’ 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত