সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ জুলাই, ২০১৬ ২১:১৩

কান্দিলের সঙ্গে সেলফি তুলেই বরখাস্ত হয়েছিলেন মুফতি

শুক্রবার গভীর রাতে নিজের ভাইয়ের হাতে খুন হন পাকিস্তানী মডেল কান্দিল বেলুচ। অনার কিলিং' এর শিকার কান্দিল বালুচ হত্যাকাণ্ডে তার ভাই মহম্মদ ওয়াসিম আজিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কান্দিলের বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কান্দিলকে খুনের কথা স্বীকার করেছে ওয়াসিম। তার দাবি, পারিবারিক ‘সম্মান’ রক্ষার জন্যই তিনি এই খুন করেছেন।

পাকিস্তানের আলোচিত সমালোচিত এই মডেলের সঙ্গে সেলফি তোলায় এরআগে পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব মুফতি আবদুল কাভিকে সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিলো।

বিতর্কিত আচরণের জন্য তখন মুফতি কাভিকে কঠোরভাবে শাসায় দেশটির ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

গত জুনের শেষ দিকে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক আদেশে মুফতি কাভিকে পাকিস্তানের জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি থেকে ছাঁটাই করা করা হয়। এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশটিতে পবিত্র রমজান শুরু ও শেষ হয়।

জুনের মাঝামাঝি সময়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুফতি কাভি ও কান্দিলের কিছু ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হয়।

এতে কাভি ও কান্দিলের ঘনিষ্ঠতা ধরা পড়ে। ছবিতে মোবাইল ফোনে আলাপরত মুফতি কাভির সঙ্গে তার টুপি মাথায় উত্তেজক মুখভঙ্গিরত কান্দিলকে দেখা যায়।

এমন বিতর্কিত ছবি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুফতি কাভিকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা ও উপহাস শুরু হয়।

পরে মুফতি কাভিকে ইসলামের নামে কলংক আখ্যা দেন মডেল কান্দিল। তিনি সিনিয়র এই আলেমকে অসংলগ্ন আচরণের জন্যও অভিযুক্ত করেন।

বিতর্কের মুখে মুফতি কাভিকে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিকে ইনসাফ দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

মডেল কান্দিল তখন দাবি করেছিলেন, একটি টিভি চ্যানেলে দেখা হলে তার ফোন নম্বর চান ওই মুফতি। পরে তিনি অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করেন।

সেলফি প্রকাশের ব্যাপারে কান্দিল বলেন, আমার মনে হয়েছিল যে, ওই মুফতির মুখোশটা প্রকাশ করা দরকার।

তিনি বলেন, এই মুফতি যখন একা থাকেন, তখন তার খাসলত হয় এক রকম। আর যখন তিনি অনুসারীদের সঙ্গে থাকেন, তখন তার আচরণ হয় আরেক রকম।

কান্দিল আরও বলেন, এই মুফতি ইসলামের নামে কলংক হয়েও নিজেকে ইসলামের অভিভাবক দাবি করেন।

খুন হওয়ার আগে গত ১৪ জুলাই কান্দিল এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, 'একজন মেয়ে হিসেবে আমাদের নিজেদের হয়েই উঠে দাঁড়াতে হবে... মেয়ে হিসেবে আমাদের একজনের পাশে অন্যজনকে দাঁড়াতে হবে... মেয়ে হিসেবে আমাদের সুবিচারের জন্য লড়াই করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি আমি একজন আধুনিক সময়ের নারীবাদী। আমি সমান অধিকারে বিশ্বাস করি। মেয়েদের কেমন হওয়া উচিত এটা আমরা ঠিক করে দিতে পারি না। শুধু সমাজের কথা ভেবে নিজেদের পরিচয়ে তকমা লাগানোর কোনও প্রয়োজন আছে বলেও আমি মনে করি না। আমি শুধুমাত্র একজন মুক্তচিন্তা এবং মুক্তমনের নারী এবং আমি যেমন আমি তেমন থাকতেই ভালবাসি।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত