সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৬:০২

রাজনীতির মাঠের নান্দনিক নারী

মেধা আর মনন দিয়ে গড়ে নিয়েছেন আগামীকে। বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনের মাধ্যমে অংশ নিচ্ছেন রাজনীতিতেও। নতুনের এ প্রতিনিধিরা ভাঙছেন ভ্রান্ত অনেক প্রথা। নান্দনিকতা ও বুদ্ধিমত্তার আকর্ষণীয় সমন্বয় ঘটাচ্ছেন কঠিন রাজনীতির মাঠে, এমন কয়েক জন নবীন নারীকে নিয়েই এ আয়োজন—

লুসিয়ানা লিওন

পেরুর সংসদের এই তরুণ সদস্য এসেছেন একটি রাজনৈতিক পরিবার থেকেই। ১৪ বছর বয়সেই দলের নবীনদের মাঝে তিনি যুক্ত হয়ে যান। নিজ দক্ষতায় সমাধান করেন প্রতিবন্ধকতা। নিজের রাজনৈতিক পটভূমি থাকা সত্ত্বেও ইউনিভার্সিটি লিমা থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি এবং মাস্টার্স করেন সান মার্টিন থেকে। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাই লুসিয়ানা লিওনের নামটি নেয়া হয় অনন্য মর্যাদার সঙ্গে।

মারিয়া কারফানিয়া

সাবেক এ সুপারমডেল ১৯৯৭ সালে মিস ইতালি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আইন বিষয়ক পড়াশোনা রয়েছে তার। বয়স যখন ৩২, সে সময় যোগ দেন ইতালির মন্ত্রিসভায়। সমঅধিকার বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে তিনি সেখানে যোগদান করেন। সে সময় রাজনীতিবিদদের মাঝে নিজের সুচারুতার কারণেও নানাভাবে আলোচিত হন।

অ্যাঞ্জেলা গেরেকু

গ্রিসের করফু আইল্যান্ডে জন্ম এ নারীর। আশির দশকে মিডিয়ার মনোযোগ কাড়েন নিজের আকর্ষণীয় সৌষ্ঠবের কারণে, যদিও মিডিয়ায় তার পদচারণ ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। পরবর্তীতে দেশটির সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

বেলিন্ডা স্ট্রোনাচ

কানাডার একজন আদর্শ রাজনীতিক ও জনহিতৈষী ব্যক্তি তিনি, যার আবার শক্ত একটি ব্যবসায়িক সত্তাও রয়েছে। মাথায় পরা হ্যাটটির জন্য বিখ্যাত কানাডিয়ান হাউজ অব কমন্সের এ সদস্য তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কনজারভেটিভ দল দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে লিবারেলসে যোগ দেন।

ইউরি ফুজিকাওয়া

একটি স্প্যানিশ ম্যাগাজিন একদা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় রাজনীতিবিদ হিসেবে আখ্যা দেয়। তিনি ছিলেন হাচিনোহে সিটির পার্ষদ। পরবর্তীতে জাপানের কনজারভেটিভ পার্টি তাকে সদস্যভুক্ত করে।

ইউলিয়া টিমোশেঙ্কো

ইউক্রেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন দেশটির অন্যতম ট্রেন্ড সৃষ্টিকারী এ নারী। কারণ তিনিই ইউক্রেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া তার পরিচিতি রয়েছে একাধারে একজন ব্যবসায়ী, আন্দোলনকর্মী এবং অর্থনীতিবিদ হিসেবেও। ফোর্বসের সেরা শক্তিধর ১০০ নারীর তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি।

অরলি লেভি

বাবা ইসরায়েল সরকারের মন্ত্রী, অর্থাত্ রাজনৈতিক পরিবার থেকেই তার আগমন। ইসরায়েলে যে নারী রাজনীতিবিদরা রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনন্য তিনি। অরলি রাজনীতিতে যোগদানের আগে কাজ করেছেন নিজ দেশের বিমান বাহিনীর সদস্য হয়ে। এছাড়া টেলিভিশনে উপস্থাপনায়ও শক্ত পরিচিতি রয়েছে তার।


জুলিয়া বঙ্ক

১৯৮৬ সালের ২৯ এপ্রিল জন্ম নেয়া এ জার্মান রাজনীতিক বর্তমান বিশ্বের কনিষ্ঠতম রাজনীতিবিদদের একজন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ড্রেসডেন শহরের ছাত্র পরিষদ হন তিনি, ১৬ বছর বয়সে হন পরিষদের বক্তা। ১৮ বছর বয়সে তিনি বাম দলের একজন রাজনীতিক হিসেবে নির্বাচিত হন।

আলিনা কাবেইভা

দু-দুবার স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন অলিম্পিকে। খেলার জগতে অসাধারণ সাফল্যের পর রাশিয়ান এ ব্যক্তিত্ব রাজনীতির জগতে পা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং এখানেও যথারীতি সফল তিনি। আলিনা কাবেইভা রাশিয়ার পাবলিক চেম্বারের সদস্য হন ২০০৫ সালে, এছাড়া ছিলেন ইউনাইটেড রাশিয়া দলের প্রতিনিধি। ২০০৮ সাল থেকে সেখানে জাতীয় মিডয়া গ্রুপে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আলিনা।

ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দে কির্চনার

আর্জেন্টিনার প্রথম নির্বাচিত এবং পুনর্নির্বাচিত নারী প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দে কির্চনার। বিখ্যাত এ রাজনীতিকের প্রভাবশালী নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আর্জেন্টিনার মিডিয়ায়। জীবনের শুরুটি কিন্তু তার সংগ্রামপূর্ণ। বাসচালক পিতার কন্যা হিসেবে যথেষ্ট সংগ্রাম করে আজ তিনি মিডিয়া প্রভাবিত একজন সফল রাজনীতিবিদ।


লুসি টরেস

ফিলিপাইনের অভিনেত্রী, মডেল ও টিভি উপস্থাপিকা লুসি টরেস। ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল একটি শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে। মিডিয়া জগতের এ সফল ব্যক্তিত্বও নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। বিয়ে করেছেন অভিনেতা রিচার্ড গোমেজকে। ২০১০ সালে ফিলিপাইনের দ্বীপ অঞ্চল লেইতের জেলা প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

আতিফেতা ইয়েইয়েগা

কসোভো পুলিশের সহকারী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পদটি ছিল মেজর জেনারেলের, এটি দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে নারী অফিসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদ। রিপাবলিক অব কসোভোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট তিনি।

ভেরা লিসকা

অস্ট্রিয়ার সংসদে যোগ দেন ২০০৩ সালে। তাছাড়া তিনি বিখ্যাত সাঁতারে তার সফল ক্যারিয়ারের জন্য, ১৯৯৬ সালে অলিম্পিকে নিজ দেশের হয়ে পান স্বর্ণপদক। সাংবাদিকতায় শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

রানিয়া আল ইয়াসিন

সামাজিক মিডিয়ার প্রভাবশালী এ ব্যক্তিত্বের পদচারণা রয়েছে বিশ্ব রাজনীতিতে। পরিচিতিটা অর্ধাঙ্গ জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ বিন আল হুসেইনের হাত ধরে হলেও সে দেশের অবকাঠামো তৈরিতে রানিয়ার অবদান তাকে দিয়েছে অন্য রকম খ্যাতি। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গোষ্ঠীভিত্তিক ক্ষমতায়ন নিয়ে তার কাজগুলো রানিয়াকে পরিণত করেছে জর্ডানের একজন প্রথম সারির ব্যক্তিত্বে।

ইভা কাইলি

সাবেক এ সংবাদ উপস্থাপিকা বর্তমানে ইউরোপিয়ান সংসদের একজন সদস্য। তিনি প্যানহেলেনিক সোশালিস্ট মুভমেন্টেরও একজন প্রতিনিধি। ৩৬ বছর বয়সী এ রাজনীতিকের আরো রয়েছে গ্রিসের প্রথম শ্রেণীর টিভি চ্যানেলে সাংবাদিকতা ও উপস্থাপনার অভিজ্ঞতা। অর্থনীতির মূল নীতিসমূহের ওপর পড়াশোনা করেছিলেন হার্ভার্ড থেকে।

সূত্র : বণিক বার্তা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত