সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ এপ্রিল, ২০১৬ ১৫:০৯

আরও পাঁচ রাজাকারের বিচার শেষ, রায়ের অপেক্ষা

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের দুই সহোদর শামসুদ্দিন-নাসিরসহ পাঁচজনের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে শামসুদ্দিন ছাড়া বাকি চারজন পলাতক আছেন।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে তাদের বিরুদ্ধে  যেকোনো দিন রায় দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। সোমবার (১১ এপ্রিল) এ আদেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।

একই মামলার ওই পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ। পলাতক চারজন হচ্ছেন শামসুদ্দিনের সহোদর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ এবং রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম।

১০ ও ১১ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা এবং পলাতক চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান।

গত বছরের ০৪ নভেম্বর থেকে গত ০১ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমানসহ রাষ্ট্রপক্ষের ২৫ জন সাক্ষী। আসামিপক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী ছিলেন না।

গত বছরের ০৪ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উপস্থাপন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

গত বছরের ১২ অক্টোবর এ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, লুণ্ঠন, নির্যাতনের সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।


এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল-মালুম, সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে ০৪ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিদের আইনজীবী আব্দুশ শুকুর খান।
 
এ মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১৪ সালের ৬ জুন। তদন্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান গত বছরের ২৬ নভেম্বর নাসিরউদ্দিন-শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেও আরও অধিক তদন্তের জন্য ফেরত পাঠান প্রসিকিউশন। তাদের বিরুদ্ধে ১২ জনকে হত্যা, গণহত্যা, আটক, নির্যাতন ও লুণ্ঠনের ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল সে সময়।

পুনর্তদন্ত শেষ করে গত বছরের ১৩ এপ্রিল তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেন তদন্ত সংস্থা। পুনর্তদন্তে আরও নতুন নতুন অভিযোগ পাওয়া যাওয়ায় অন্য তিনজনকে এ মামলার আসামি এবং অভিযোগ বাড়িয়ে সাতটি করা হয়েছে।

এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন প্রসিকিউশন। গত বছরের ১৩ মে এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার করিমগঞ্জ মধ্যপাড়া (দুলিপাড়া) গ্রামের মো. নাসিরউদ্দিন ও মো. শামসুদ্দিনের বাবার নাম মৃত আব্দুর রাজ্জাক মুন্সি ও মায়ের নাম মৃত লুৎফুন্নাহার লতা। এ দু’জনের মধ্যে বড় ভাই নাসিরউদ্দিন সেনাবাহিনীর ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেন। ২০০২ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান। অন্যদিকে ছোট ভাই শামসুদ্দিন কিশোরগঞ্জে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত