সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৮:২৩

সীমান্ত হত্যায় আমাদেরও দায় আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশিদেরও দায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনায় উঠে এসেছে সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গও, যেটি এখনও দুই দেশের সম্পর্কে কাঁটা হিসেবে রয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার এই ভিডিও কনফারেন্স শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, শেখ হাসিনা সীমান্ত হত্যার বিষয়ে তার সরকারের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন নরেন্দ্র মোদিকে।

জবাবে মোদি বলেন, তার দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে না, এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সংযম দেখাবে তার দেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এও বলেন, ‘আমাদেরও দোষ আছে। আমাদের কিছু দুষ্টু লোক তাদের সীমান্তের অনেক ভেতরে চলে যায়। অস্ত্র-বারুদ নিয়ে যায়। সেখানকার স্থানীয়রাও এর সঙ্গে জড়িত। আমাদের সীমান্তে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমাতে হবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানেও (সীমান্তে) অপরাধ হয়। এজন্য যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে।’

দুই প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠকের আগের দিন লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি গুলিতে নিহত হয়েছেন। ভারত থেকে গরু পাচার করার সময় বিএসএফ গুলি চালায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ রকম মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই আসে গণমাধ্যমে, যা নিয়ে দুই দেশের গণমাধ্যমেই ব্যাপক সমালোচনা আছে। ভারতীয় মানবাধিকার কর্মীরা সীমান্ত হত্যার এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন রেখেছেন।

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংলাপেও বারবার উঠে আসে এই প্রসঙ্গটি। ভারত একাধিকবার সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার না করার অঙ্গীকার করেও রাখেনি।

২০১৯ সালের জুলাই মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জাতীয় সংসদে জানান, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

সীমান্তে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সিংহভাগেই গরু পাচার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার গরু নিয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলেছি। দেশবাসীর মতো আমরাও হতাশ।…সীমান্ত হত্যা দুই দেশের জন্যই অস্বস্তিকর বিষয়। অনেক ভালো সম্পর্কের পরও এ ধরনের দু-একটি ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।’

মোদি এ ব্যাপারে কী বলেছেন- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ সরাসরি সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার বিষয়ে আবারও ঘোষণা দিয়েছেন।

‘ভার্চুয়াল বৈঠকের আলোচনার কার্যপত্রে ভারত সীমান্ত হত্যার বিষয়ে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করবে বলা হয়েছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত