সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ২২:৫৯

উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসলামকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে : তথ্যমন্ত্রী

ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হানার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ইসলামী চিন্তাবিদসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিশোর-তরুণদের বিপথগামী করা হয়, ইসলামকে ক্ষমতায় যাওয়ার সোপান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। একইভাবে ভাস্কর্যের বিরুদ্ধাচরণ, আবহমান বাংলার নানা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হানা, পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন তোলা-এগুলো যে ঠিক নয়, সেটি জনগণের কাছে পৌঁছানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম রক্ষা এবং ইসলামের ওপর কালিমা লেপনকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সকলকে নিয়ে ইসলামী চিন্তাবিদদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানাই।’

মন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম আমিন সংকলিত ‘সন্ত্রাস নয় সম্প্রীতির ধর্ম ইসলাম’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

গ্রন্থটির সংকলক রাজনৈতিককর্মী হিসেবে সুপরিচিত হলেও প্রথমে মাদরাসা ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনকারী আমিনুল ইসলাম আমিন ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট প্রজ্ঞার অধিকারী বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।

‘আমাদের দেশে কিছু রাজনৈতিক শক্তি এবং একইসাথে কিছু উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসলামকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়’উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘একাত্তর সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছিলো তখন ইসলাম রক্ষার দোহাই দিয়ে পাকিস্তান রক্ষার কথা বলা হয়েছিল এবং মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কাফের আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ইসলামের কথা বলে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জিয়াউর রহমানসহ যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করা ও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেবও ইসলামকে ব্যবহার করে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করেছেন, অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা করেছেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এমন হয়েছে।’

জঙ্গিদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা যখন কথা বলেন, তখন আশপাশে সেই নেতারা থাকে, যারা শ্লোগান দিয়েছে বা দেয় ‘আমারা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’।

‘তাদেরকে সাথে নিয়েই বিএনপি অন্যের ওপর জঙ্গি সম্পৃক্ততার দোষ চাপানোর অপচেষ্টা করে। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে সক্ষমতা দেখিয়েছে, অন্য কোনো রাষ্ট্র তা দেখাতে পারেনি। বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে পাঁচশ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা হয়েছে, বিএনপির তারেক রহমানের পরিচালনায় জঙ্গিদের নিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল, সেগুলো দিবালোকের মতো স্পষ্ট। জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতায় কোটালীপাড়ায় বোমা হামলার পাঁয়তারা হয়েছে, শেখ হেলাল, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় হামলা হয়েছে এবং এসএম কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে।’

‘জঙ্গিকে আমরা আজকে দমন করতে সক্ষম হয়েছি কিন্তু বাংলাদেশে বিএনপি যদি জঙ্গিদের এভাবে পৃষ্ঠপোষকতা না দিতো বা জঙ্গিগোষ্ঠী সাথে নিয়ে রাজনীতি না করতো, বিএনপি যদি পৃষ্ঠপোষকতা না দিতো, তাহলে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হতো’ বলেন ড. হাছান।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ ও বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম আমিন সংকলক হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত