সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:৫৮

মুক্তিপণে মুক্ত ব্যাংক ম্যানেজার

১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ পরিশোধের পর সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার উদ্ধার

সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) দাবিকৃত ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ পরিশোধের পর র‌্যাবের মধ্যস্থতায় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংকটির রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, 'র‍্যাবের মধ্যস্থতায় নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে।'

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রুমা উপজেলার একটি দুর্গম পাহড়ে তার ভাই মিজানুর রহমান, স্ত্রী মাইছূরা ইসফাত ও স্ত্রীর বড় বোন নিশাত জাহানের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। তবে এখনও তারা কেএনএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। বিফ্রিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এর আগে সন্ধ্যায় অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে মুক্ত করতে কেএনএফ-এর দাবিকৃত ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ পরিশোধ করে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগে কেএনএফ'র মনোনীত প্রতিনিধির কাছে এই টাকা হস্তান্তর করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন অপহৃতের পরিবার।

অপহৃত সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনের পরিবারের এক সদস্য বলেন, টাকা পরিশোধের পরপরই কেএনএফ'র পক্ষে যোগাযোগকারীর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আবারও যোগাযোগ হয়। তখন কেএনএফ প্রতিনিধি বলেন, ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন এখন নামাজ পড়ছেন। নামাজের পরপরই তাকে মুক্ত করা হতে পারে।'

এই বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম (বান্দরবান) মো. ওসমান গণি বলেন, 'আমাদের সহকর্মী নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে সব ধরনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসন খুবই তৎপর। আশা করছি খুব শিগগিরই নেজাম উদ্দিনের মুক্তি মিলবে।'

তবে মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে একদল বন্দুকধারী বান্দরবানের রুমা উপজেলা কমপ্লেক্সের মসজিদ ঘেরাও করে ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যায় এবং ব্যাংকে তাণ্ডব চালায়।

পরদিন বুধবার বন্দুকধারীরা থানচি বাজার ঘেরাও করে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের দুটি শাখা তছনছ করে এবং ব্যাংকের কাউন্টার ও উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানান থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার দুপুরেই ঢাকায় প্রেস ব্রিফিংয়ে রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে সশস্ত্র হামলার জন্য কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফকে দায়ী করলেও কেএনএফ এর তরফ থেকে এ বিষয়ে কোনো বার্তা আসেনি।

রুমা ও থানচির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কাউকে এখনও আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এসব ঘটনায় পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টির 'সংশ্লিষ্টতা' পাওয়ার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেএনএফ'র সঙ্গে পরবর্তী বৈঠক বাতিল করেছে বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব গঠিত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।


সূত্র: দ্য বিজসেন স্ট্যান্ডার্ড

আপনার মন্তব্য

আলোচিত