নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০২:২৫

ফেসবুকে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সামাদ

ঢাকার সূত্রাপুরে বুধবার (৬ এপ্রিল) রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের হাতে খুন হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

বিভিন্ন প্রগতিশীল আন্দোলনেও তিনি বিভিন্ন সময়ে নানানভাবে যুক্ত ছিলেন। সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে অনেক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে বলেও জানিয়েছেন তাঁর বন্ধুরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর প্রোফাইলে গত কয়েকদিনের পোস্ট ঘেঁটে দেখা যায় - ধর্মীয় জঙ্গিবাদের আস্ফালন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ থেকে দেশ অনেক সরে আসছে বলেও আফসোস ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পরিষদ,সিলেট জেলা শাখার তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা সামাদের।


গত দুই এপ্রিল এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন,  "আওয়ামী ওলামালীগ আর বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ দুই বিপরীত মেরুর দুই বাসিন্দা। ওলামালীগ কখনোই বাহাত্তরের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান চায়নি এবং চাইবে না।"

২৮ মার্চ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন- "রাষ্ট্রধর্ম দেখে কেউ করিস না ভয়, আড়ালে তার ইসলামী জঙ্গি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

হাসে।"


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন , "দুধ-কলা দিয়ে সাপ পুষছেন! এই সাপগুলা একসময় আপনাকেই দংশন করবে এবং দংশন ও রক্তাক্ত করবে আমার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।"  

নিজেকে নির্দিষ্ট কোন ধর্মের অনুসারি মনে করেন না বলেও প্রোফাইলের রিলিজিয়াস ভিউতে লিখেছিলেন সামাদ। রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে লিখেছিলেন তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থক।

 

 

দেশে কোন শরিয়া আইন চালু হলে মুসলিমরাই তা সইতে পারবে না বলে মত ছিল তার।

তিনি তনু হত্যার বিচারের দাবিতেও সোচ্চার ছিলেন। এই হত্যার বিচারের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি।



খুন হবার আগের দিনই তিনি দেশের বিদ্যমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।




বুধবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে তাকে প্রথমে চাপাতি ও পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার সময় খুনীদের "আল্লাহু আকবার" বলতে শোনা যায় বলে স্থানীয়রা জানান।

মৌলবাদ বিরোধী তাঁর এসব অবস্থানের কারণে তিনিও ধর্মীয় উগ্রবাদীদের বলি হয়েছেন বলে মনে করছেন তাঁর বন্ধুরা। তবে  
সূত্রাপুর থানার ওসি তপন কুমার সাহা সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে  জানিয়েছেন, তাৎক্ষনিকভাবে এই হত্যার কারণ বুঝতে পারেছন না তারা। 

নাজুমুদ্দিন সামাদের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন।  এর আগে তিনি সিলেটের বেসরকারি লিডিং ইউনির্ভাসিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত