আদালত অবমাননায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী   মোজাম্মেল হক ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে জরিমানা করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। দণ্ডিত দুই মন্ত্রী তাদের শপথ লঙ্ঘন করেছেন বলে প্রকাশিত রায়ে উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।

রায়ে বলা হয়, সংবিধান অনুসারে আইনের শাসন সুরক্ষায় বিবাদীরা (দুই মন্ত্রী) অবহেলা করেছেন। আমাদের কোনো সন্দেহ নেই যে বিবাদীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁরা দোষও স্বীকার করেছেন। তাঁরা আইনভঙ্গের মতো কাজ করেছেন। সংবিধান সমুন্নত রাখার দায়িত্ব পালনে শপথ ভঙ্গ করেছেন। বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই প্রতিষ্ঠানকে খাটো করেছেন।

রায় লিখেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ইমান আলী ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। বিচারপতি ইমান আলীর লেখা রায়ে একমত পোষণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। অন্যদিকে, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি নিজামুল হক।

আদালত অবমাননার দায়ে গত ২৭ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে দোষী সাব্যস্ত করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ডের নির্দেশও দেওয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের আট সদস্যের বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির আদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা পুনরায় শুনানির দাবি জানান। ওই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন।