সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০২০ ১৮:০৮

ডা. সারওয়ার আলী হত্যাচেষ্টা ডাকাতির ঘটনা: পিবিআই

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী হত্যাচেষ্টা মামলা নতুন মোড় নিয়েছে। ভুক্তভোগী ঘটনাটিকে জঙ্গি হামলা বলে দাবি করলেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রাথমিকভাবে এটিকে ডাকাতির ঘটনা বলে মনে করছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) বশির আহমেদ বলেন, ‘মো. ফরহাদ (১৮) নামে এক যুবককে ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ভোর ছয়টায় উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, ঘটনার সঙ্গে সাত জন সংশ্লিষ্ট রয়েছে। মূল পরিকল্পনাকারী ডা. সারওয়ার আলীর স্ত্রীর সাবেক গাড়ি চালক নাজমুল।’

বশির আহমেদ জানান, ‘গ্রেপ্তার ফরহাদ দিন মজুর হিসেবে কাজ করে। গত ৩ জানুয়ারি তাকেসহ আরও একজনকে দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে কাজে নেওয়া হয়। পরে এ চক্রে আরও চারজন যোগ হয়ে আশকোনার একটি রেস্টুরেন্টে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন বিকালেও আশকোনার রোজ ভ্যালি হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষে সাত জন পরিকল্পনা করে এবং সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে যায়।’

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে। টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিতে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ফরহাদ জানিয়েছে। তবে কোনও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করলে জানা যাবে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ দুজন ছাড়া অন্যদের নাম পরিচয় জানানো সম্ভব হচ্ছে না।’

ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, ‘উত্তরার ৭ নম্বরের সেক্টরের ওই বাসার চতুর্থ তলায় সারওয়ার আলী এবং তৃতীয় তলায় তার মেয়ে থাকেন। দুর্বৃত্তদের দুজন প্রথমে তৃতীয় তলায় গিয়ে মেয়ে, মেয়ের স্বামী ও সন্তানকে জিম্মি করে। তাদের আঘাত করে সারওয়ার আলীর অবস্থান জানতে চায়। চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের কথা বললে একজন ওপরে যায় এবং দরজা নক করে। দরজা খোলা হলে প্রথমে সারওয়ার আলীর স্ত্রী ও পরে সারওয়ার আলীকে জিম্ম করে তারা। পরে তৃতীয় তলা থেকে আরও একজন আসে। এ সময় তারা চিৎকার করলে দ্বিতীয় তলায় থাকা এক ব্যক্তি এবং তার ছেলে গিয়ে তাদের বাঁচান। এর মধ্যে সারওয়ার আলীর মেয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের দিয়ে সহায়তা চাইলে তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, বাসায় দু’জনই গিয়েছিল বাকি পাঁচজন আশপাশে ছিল। ফরহাদও বাসার আশপাশে অবস্থান করছিল। তবে পুলিশ যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করেছে তারা এই সাতজনের বাইরে। তবে গ্রেপ্তার ওই দু’জনেরও এ ঘটনায় সহযোগিতা রয়েছে। হামলার সঙ্গে দু’জন শিক্ষিত যুবক রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। এছাড়া কোনও এক বিষয়ে ডা. সারওয়ার আলীর সঙ্গে তর্ক করার কারণে চালক নাজমুলকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছিল বলে জানান বশির আহমেদ।

উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি রাত ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সারওয়ার আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই দুষ্কৃতকারী তার উত্তরার বাসভবনে ঢোকে। সারওয়ার আলীকে তারা আঘাত করতে না পারলেও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মাখদুমা নার্গিস, তাদের মেয়ে সায়মা আলী ও জামাতা হুমায়ুন কবির ও দুই প্রতিবেশী। হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত চার–পাঁচজনকে আসামি করে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মামলা করেন সারওয়ার আলী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত