সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ জানুয়ারি, ২০২০ ০২:৩০

অপরাধে সম্পৃক্ত বলেই শরিয়ত বাউল গ্রেপ্তার: প্রধানমন্ত্রী

সম্প্রতি গ্রেপ্তারকৃত শরিয়ত বাউল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিশ্চয়ই কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তিবিশেষ অপরাধে সম্পৃক্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাউল শিল্পীরা এমন কোনো কাজ যাতে না করেন, যার জন্য যে বাউল গান বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নিয়েছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে জাসদের এমপি হাসানুল হক ইনুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা উদ্যোগ নিয়ে বাউল গানকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তবে বাউল গানের তো কোনো দোষ নেই। কিন্তু বাউল গান যারা করেন, তাদের ব্যক্তিবিশেষ কোনো অপরাধে সম্পৃক্ত হলে আইন তার আপন গতিতে চলবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর সঙ্গে গানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

হাসানুল হক ইনুর প্রশ্নের সূত্র ধরে সামরিক শাসনামলের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় ছিল, সেখানে গণতান্ত্রিক ধারা ছিল না। তারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসেছে। একের পর এক ক্যু হয়েছে। মিলিটারি ডিক্টেটররা ক্ষমতায় এসেই রেডিও-টেলিভিশনে ঘোষণা দেয়, আজ থেকে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম। আর হয়েই তাদের কাজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা। সুইপারের কাজটাই তারা আগে করে। এটা আমরা সব সময় দেখেছি। প্রথমে দেখা যায় রাস্তার পাশে কচুঘেঁচু যা থাকে, কেটেকুটে সাফ করে। দেয়াল মুছে পরিষ্কার করে। আবার কেউ সাইকেল চালিয়ে সাশ্রয় করেন। সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর সব থেকে দামি গাড়ি নিয়ে চলে আসছে। কেউ বলছে কৃচ্ছ্র সাধন করছি। বলে টি-শার্ট পরে লেগে গেলেন। কিন্তু দেখা গেল প্যারিস থেকে স্যুট আসছে। ফ্রেঞ্চ শিফন শাড়ি আসছে। তারাও তখনকার যুগের দামি ব্র্যান্ডের সানগ্লাস রে-ব্যান পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সংসদ নেতা বলেন, এ রকম বহু নাটক মিলিটারি ডিক্টেটররা করে থাকে। কাজেই চুল কাটা শুধু নয়, এছাড়া অনেক কাজই তারা করেছেন। এ রকম বহু কিছু আমরা জীবদ্দশায় দেখেছি। অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর যে কাজটা করলে ক্ষমতা একটু পোক্ত করা যায় বা নিজেদের মানুষের সঙ্গে গ্রহণযোগ্য করা যেতে পারে, তারা তা করতে চায়। তবে তাদের এসব উদ্যোগ বেশিদিন টেকে না। মাস ছয়েক থাকে, তার পরই চেহারা পাল্টে যায়। আর এখনো যদি কেউ কিছু করে থাকে, অন্যায়-অপরাধ করলে আমরা তা দেখব। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। অহেতুক কারো চুল কাটা বা গানের প্রতিবন্ধকতা করা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি শরিয়ত বাউলের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ তুলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আগধল্যা গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম ফরিদুল ইসলাম মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। পরে শরিয়ত বাউলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড শেষে তাকে জেলহাজতে নেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত