সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:৫৪

নদী বাঁচাতে নদীকে জানতে হবে

নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং টিকিয়ে রাখতে হলে নদীকে জানতে হবে; সর্বস্তরের জনসাধারণের মিলিত এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগই পারে নদীকে বাঁচাতে- নদী বিষয়ক এক সম্মেলনে এমনই মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।

শুক্রবার কুয়াকাটার গ্রেভার ইন হোটেলের কনফারেন্স হলে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ’র আয়োজনে দুই দিন ব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে অতিথিরা এমন আহ্বান জানান। সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। মূল নিবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

এ ছাড়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন পানি সম্পদ এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত।

ফারাহ্ কবির বলেন, আমাদের নদী এবং সব জলাশয়কে রক্ষা করতে হবে। নদীর অধিকার এবং এ বিষয়ক রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। নদী নিয়ে জনসাধারণের যে চিন্তা-ভাবনা তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

মূল নিবন্ধে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ নদী নিয়ে কূটনৈতিক জটিলতা নিরসনের ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘নদী জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পর এখন সময় এসেছে নদীকে সমস্ত কূটনৈতিক জটিলতা থেকে মুক্ত করার। আর এ জন্য উদ্যোগী হতে হবে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ যখন ঝড় তুফান, বন্যা-জলোচ্ছ্বাস আসে, তখন মানুষের মধ্যে যে ভয় সৃষ্টি হয় সেটি তাদের মাঝে থেকে যায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই ভয় সংক্রমিত হয়। আগে দেখা যেত দীর্ঘদিন যেমন প্রায় ৫০ বছর পর পর এক একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসত। কিন্তু এখন একটি মানুষ তার জীবনকালেই বেশ কয়েকটা দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। এই ভয়টাকে দূর করাটা জরুরি।’

ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং টিকিয়ে রাখতে হলে নদীকে জানতে হবে। নদীর প্রতিটি ধাপ, চরিত্র জানতে হবে। নদীর প্রশস্ততা কমে গেলে অথবা নদী শাসন করা হলে নদীর ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর তখনই নদীকে আমরা হারিয়ে ফেলতে বসি।’

নদীর জন্য সাধারণ জনগণকে মুখর হতে, প্রতিবাদ জানাতে আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নদীর আইনগত অধিকারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘আগামী প্রজন্মকে একটি টেকসই, উন্নত সমাজ নিশ্চিত করার জন্য নদীর আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা, সব ধরনের জটিলতা নিরসন করতে হবে। নদী, পরিবেশ, নিজেদের এবং আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে উদ্যোগী হতে হবে। আইনে নদী, জলাধার, পুকুর সব ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে এবং সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নদীর উন্নয়নে সঠিক উদ্যোগটি নিতে হবে। নদী শুধু জীবিত সত্তা নয়, মাতৃসত্তা।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে নদী এবং পানিবিষয়ক তিনটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। দ্বিতীয় দিনে আরও ছয়টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত