সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ১৬:০২

বিটিআরসিতে গ্রামীণফোনের এক হাজার কোটি টাকা জমা

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) বকেয়া রাজস্বের এক হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছে গ্রামীণফোন।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিটিআরসি মিলনায়তনে কমিশনের চেয়ারম্যান জহুরুল হকের হাতে এক হাজার কোটি টাকার পে-অর্ডার তুলে দেয় গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ।

এ সময় গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাতের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক আদেশে সোমবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে বিটিআরসিতে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়।

পরে শুক্রবার গ্রামীণফোন এক বিবৃতিতে জানায়, রোববার এই টাকা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার এক হাজার কোটি টাকার পে অর্ডার জমা দিল গ্রামীণফোন।

২০১৯ সালের নভেম্বরে গ্রামীণফোনকে আপাতত দুই হাজার কোটি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। ওই সময় তিন মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই টাকা জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে টাকা জমা দেওয়া না হলে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির দাবি করা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপর হাই কোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও তখন সতর্ক করে দেন আদালত।

পরে উচ্চ আদালতের দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশনার বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন রিভিউ আবেদন করে। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আদালত ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। তার আগের দিন বুধবার অডিট আপত্তির দাবির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে বিটিআরসিতে ১০০ কোটি টাকা জমা দিতে (১৯ ফেব্রুয়ারি) গিয়েছিল গ্রামীণফোন। তবে তা ফিরিয়ে দেয় বিটিআরসি।

প্রসঙ্গত, অডিট আপত্তির ভিত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বকেয়া রাজস্ব দাবি করে আসছে বিটিআরসি। এর মধ্যে বিটিআরসির নিজস্ব পাওনা ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পাওনা ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।

এই অর্থ আদায়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। চিঠি দিয়ে বকেয়া অর্থ দাবির পর তা পরিশোধ না করায় ২০১৯ সালের এপ্রিলে গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটার (রবি) ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত অপারেটর দুটিকে কোনো এনওসি (নতুন সেবা প্রদান) করার সিদ্ধান্তও আসে। তৃতীয় ধাপ হিসেবে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না— সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিটিআরসি। সর্বশেষ ধাপ হিসেবে গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক বসানোর ইঙ্গিত দেয় নিয়ন্ত্রণ কমিশন। সেই সঙ্গে চলতে থাকে দেন-দরবার। গেল বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর এক বৈঠকে সরকার নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসার কথাও জানায়। একই সঙ্গে আদালতে আইনি প্রক্রিয়াও চলতে থাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত