সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২৩:৩০

সচল হলো হবিগঞ্জে পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিন, রেল বহরে যুক্ত হচ্ছে বুধবার

হবিগঞ্জের মাধবপুর নোয়াপাড়া স্টেশনে আগুনে পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটি সচল করেছে পার্বতীপুরের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা)। এতে করে আগামীকাল বুধবার ইঞ্জিনটি  ফের রেল বহরে যুক্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে নিজেদের চেষ্টায় ইঞ্জিনটি সচল হওয়াতে ৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি।

রেলওয়ের সূত্রে জানায়, গত ২০১৩ সালে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় এমইআই-১৫ শ্রেণির ১১টি ইঞ্জিন আমদানি করা হয়। বিশ্বমানের ওই ইঞ্জিনগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানিতে তৈরি। এসব ইঞ্জিন দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ট্রেন পরিচালনা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৯৩৩ নম্বর ইঞ্জিনটি ২০১৩ সালে ৭ অক্টোবর দুর্ঘটনায় পড়ে। ইঞ্জিনটি ঢাকা সিলেট রেলরুটে পারাবত আন্তঃনগর ট্রেনটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় হবিগঞ্জের মাধবপুর নোয়াপাড়া স্টেশনে ওই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় পতিত হলে ইঞ্জিনটির নিচের অংশের জ্বালানি ট্যাংকে আগুন লেগে যায়। ফলে তা সম্পূর্ণ বিকল (ড্যামেজ) হয়ে পড়ে। পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটি নেওয়া হয় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেল শপে। ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা কোনোক্রমে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে এর সচল হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে ২০১৯ সালের ১৫ মে মেরামতের জন্য তা কেলোকায় পাঠানো হয়।

কেলোকার প্রধান নির্বাহী (সিএক্স) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা জানান, ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণ খুলে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। কারখানার শ্রমিক-প্রকৌশলীরা সে জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।

তিনি বলেন, এটা ছিল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মেরামত ও রিকনন্ডিশনিংয়ে সফল হই আমরা। দীর্ঘ ৮ মাস অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে আমরা ইঞ্জিনটি সচল করেছি। দেশে এই প্রথম এ ধরনের একটি ড্যামেজ লোকোমোটিভ সচল করা সম্ভব হল।

কেলোকার একটি সূত্র মতে, ইঞ্জিনটি রিকন্ডিশনিংয়ে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি টাকা। অথচ একটি নতুন মিটারগেজ ইঞ্জিন আমদানিতে খরচ হত ৩৩ কোটি টাকা। প্রায় ৩০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করেছে সংশ্লিষ্টরা।

এ নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টোক) মো. মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী সঙ্গে। সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া ইঞ্জিনটিকে সচল করাকে তিনি ‘বিস্ময়কর’ ঘটনা বলে দাবি করেন। এজন্য তিনি কেলোকার শ্রমিক প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। এ ধরনের একটি ড্যামেজ ইঞ্জিন সচল হওয়ায় রেল অঙ্গনে আনন্দ বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত