সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ মার্চ, ২০২০ ১৬:১৯

প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যান। তারা কোযারেন্টিনে যাওযার বিষয়ে খুব অসন্তুষ্ট হন। ফাইভ স্টার হোটেল না হলে তারা অপছন্দ করেন।

রোববার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাযান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরতো দৈন্য আছে। এটা তো একটা বিশেষ অবস্থা। আমরা যাদের নিয়ে আসি, তাদের হজক্যাম্পে রাখি, এখন আরও কয়েকটা হাসপাতালও জোগাড় করেছি।’

শনিবার ইতালিফেরত প্রবাসীদের হজ ক্যাম্পে কোযারেন্টিনে রাখা হলে তারা বিক্ষোভ করেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল খুব অস্থিরতা করেছেন। তারা দেশে আসছেন, কোনো কোযারেন্টিনে যেতে চান না। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে যাবেন, এই আগ্রহে আসছেন। আমরা যেখানে রেখেছিলাম, আগেও রেখেছিলাম, তারা সেটা পছন্দ করেননি। বাংলাদেশে ফ্ল্যাট বাথরুম, তারা কমোড বাথরুম ইউজ করেন, সুতরাং তাদের অসুবিধা হয়েছে। আমরা সেখানে পর্যটন থেকে খাবার দিয়েছি, তারা মনে করেন সোনারগাঁও, ফাইভ স্টার থেকে খাওযার দেওযা উচিত। সেটা দিতে পারিনি। সে জন্য তারা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন রকম অভিযোগ ছিল। তারা মনে করেন এগুলো খুব নোংরা।’

এ কে মোমেন বলেন, যেসব দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেশি, সেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওযা হয়েছে। রোববার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে এটা কার্যকর হবে। সরকারের মূল উদ্দেশ্য জনগণকে রক্ষা করা। কয়েকজনের কারণে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ অসুস্থ হোক সরকার তা চায় না। কারণ বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা আছে। সরকার আগে আবেদন করেছিল যাতে যারা প্রবাসে আছেন, তারা আরও কিছুদিন সেখানে থাকেন। কিন্তু তারা সেটা শুনেননি। সে জন্য বাধ্য হয়ে ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে।

ঠিক কতটি দেশের ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইউরোপকে যেহেতু এপিসেন্টার ঘোষণা করা হয়েছে, সে জন্য যুক্তরাজ্য ছাড়া অন্য দেশগুলো এবং যেসব দেশে প্রকোপ বেশি, যেমন: চীন, দক্ষিণ কোরিযা, ইরান এসব দেশ থেকে কেউ এখন আসুক তা সরকার চায় না। তিনি বলেন, কেউ যদি ২৮ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো দেশ ভ্রমণ না করে থাকেন, তাহলে তিনি যুক্তরাজ্য থেকে আসতে পারবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত তাদের দেশে যেতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশও আজ থেকে ভারতের নাগরিকদের এ দেশে আসতে দেবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এ কে মোমেন বলেন, স্কুল–কলেজ হিড়িকের মধ্যে বন্ধ করে দেওযা হলে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। কিন্তু মিডিযার কারণে অনেকে মনে করছেন, বাচ্চারা হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে। কিন্তু একটাও ছাত্রছাত্রী আক্রান্ত হয়নি। শিক্ষার্থীদের কেউ অসুস্থ হলে সমস্যা হতো। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড স্কুল বন্ধ করেনি। পশ্চিমবঙ্গ করেছে, সেটা অন্য কারণেও হতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, শিক্ষার্থীরা স্কুলে থাকলেই বরং ভালো। স্কুলে হাত ধুতে হয়, কীভাবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের উপায় শিখছে। বাড়িতে গেলে তারা ঘুমাবে এবং খারাপ কাজ হবে।

এ কে মোমেন বলেন, তবে এ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত সতর্ক। প্রতিনিয়ত নজর রাখা হচ্ছে। যখন প্রয়োজন হবে এবং কোনো ‘ইন্ডিকেশন’ পাওযা যাবে, তখন অবশ্যই স্কুল–কলেজ বন্ধ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত