নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ২০:৫০

জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবি, ছয় দিনের কর্মসূচী ঘোষণা বিদ্রোহীদের

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ব্যর্থ আখ্যায়িত করে এই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিদ্রোহীরা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অছাত্র, বিবাহিত, ছিনতাকারী, শিবির-ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নগরীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতারা এসব অভিযোগ করেন। এসময় জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে ছয় দিনের কর্মসূচীরও ঘোষণা করেন তারা।

কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, সকল কলেজে বিক্ষোভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনাস্থা প্রাচীর গড়া, গণস্বাক্ষর অভিযান প্রভৃতি।

বৃহস্পতবার মতবিনিময়কালে ছাত্রলীগের কমিটিবিরোধী নেতারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ.এম. বদিউজ্জামান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম সিলেটে এসে শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি এবং রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের গতিশীলতা আনয়ন করতে কোনরুপ পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কোন উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম ব্যতিত এবং উপজেলার নেতৃবৃন্দের সাথে কোনরুপ সাংগঠনিক যোগাযোগ ছাড়াই বেশ কয়েকটি উপজেলা কমিটি বাতিল করেন। আজ অবদি একটি উপজেলা কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। জেলা ছাত্রলীগের তৃনমূল কর্মীদের নিয়ে কোন কর্মীসভা পর্যন্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের সভা সমাবেশ যোগদান এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের মধ্যেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল।

এমতাবস্থায় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে নিজের অনুসারী এবং ঘনিষ্টজনদের নিয়ে পূর্নাঙ্গ করতে তৎপর হয়ে উঠেন। যার ফলস্বরুপ অভিভাবক সংগঠন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কোন আলোচনা না করেই নিজস্ব বলয় ভারি করার জন্য অছাত্র, বিবাহিত, চাঁদাবাজ, ছিনতাকারী, শিবির ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী, হত্যা মামলার আসামী এবং অর্থের বিনিময়ে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন। এমন হঠকারী, অবিবেচক এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী সিদ্ধান্ত ছাত্রলীগের অন্তঃপ্রাণ নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারছি না।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইনের নেতৃত্বের সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে আসছি। অতীতেও ছাত্র শিবির বিতাড়ন, বিএনপি জামাতের অগ্নিসংযোগ আন্দোলন মোকাবেলা এবং ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনেও ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। এই কমিটি মেনে নেওয়া মানে আমাদের রক্তের সাথে বেইমানী করা, আদর্শের সাথে বেইমানী করা।

কমিটি বিরোধী নেতারা বলেন, ৮ ডিসেম্বর মাজার জিয়ারত আর শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার নামে যে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে রামদা মিছিল ও আগ্নেয়াশ্রেয় প্রদর্শণ হয়, সেই কমিটির নেতৃত্ব আমরা কিভাবে মেনে নিব?

বক্তারা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইনের কাছে অনতিবিলম্বে গঠিত কমিটি বাতিল করে সিলেটের ছাত্রলীগকে রক্ষা করার দাবি জানান।

মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সহ সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ আকাশ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাস, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনক পাল অরূপ, আইন সম্পাদক টিপু রঞ্জন দাস, উপ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক বখতিয়ার আকরাম চৌধুরী অনিক, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাদিকুর রহমান প্রমুখ।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত