সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:১৭

‘জাতীয় বেইমান’ আখ্যার পর যা বলছেন শমসের মুবিন

শমসের মুবিন চৌধুরী

নির্বাচনে অংশ নিয় দলের মনোনয়নে প্রার্থী হওয়া অপর নেতাদের বিরূপ মন্তব্যের মুখে পড়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। তৃণমূল বিএনপির কিছু প্রার্থী গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভায় দুই শীর্ষ নেতাকে ‘জাতীয় বেইমান’ হিসেবে আখ্যা দেন।

কিছু নেতার এমন বিরূপ মন্তব্যকে উড়িয়ে দিয়েছেন শমসের মুবিন চৌধুরী। তার দাবি, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে তৃণমূল বিএনপির কিছু প্রার্থী বিরূপ মন্তব্য করছেন। অন্যদিকে দলটির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার প্রশ্ন তুলেছেন, দলের প্রার্থীরা ভোটের মাঠ ছেড়ে ঢাকায় কী করছেন?

‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দলটির প্রার্থীদের কারও কারও অভিযোগ, দলের দুই শীর্ষ নেতা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। দলের তহবিল তছরুপ করেছেন। প্রার্থীরা আরও কিছু অভিযোগ করেন।

তৃণমূল বিএনপির সব প্রার্থীর সঙ্গে ‘মতবিনিময় ও আলোচনা সভা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আসনে দলের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা দাবি করেছেন, দলের ১৩০ জন প্রার্থী এখন তাদের সঙ্গে আছেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা-১৫ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী খন্দকার এমদাদুল হক ওরফে সেলিম।

নেতাদের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘সভাটি কয়েকজন ব্যক্তি করেছেন, তৃণমূল বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল না। তারা তৃণমূল বিএনপির ব্যানার টানিয়েছেন অবৈধভাবে। মহাসচিব কিংবা আমার অনুমতি ছাড়াই তারা ব্যানার টানিয়েছেন।’

আয়োজকেরা তো তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী—এ বিষয়ে শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘তারা তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আছেন, মনোনয়নপত্র যখন তারা নেন, তখন বড় বড় কথা বলে নিয়েছেন। এখন পারছেন না, তাই এমন করে তারা বলছেন। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে তারা আমাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন।’

প্রয়াত মন্ত্রী নাজমুল হুদা প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল বিএনপি আদালতের নির্দেশে নিবন্ধন পেয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন তার মেয়ে অন্তরা হুদা। তাকে সরিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দলের প্রথম সম্মেলনে সভাপতি হন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী, যিনি আমলা থেকে রাজনীতিবিদ হয়েছিলেন। তৃণমূলে আসার আগে তিনি ছিলেন বিকল্পধারায়। মহাসচিব হন বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সময় বহিষ্কৃত) তৈমুর আলম খন্দকার।

দলের চেয়ারপারসন শমসের মুবিন চৌধুরী সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন। তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। তৈমুর নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন।

দলের প্রার্থীদের ‘কয়েকজনের’ সভা করার বিষয়টিকে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি দলের তহবিল ‘তছরুপের’ অভিযোগ নিয়ে বলেন, ‘তহবিল তো আগে কেউ দিতে হবে, তছরুপ তো পরে। সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনী ব্যয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আগের কিছু অর্থ, দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও সচ্ছল সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তায় নির্বাচনের খরচ কিছু জোগাড় করা হয়েছে।’

আলোচনার জন্য দলের প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকে এনে চার দিন ধরে বসিয়ে রাখার অভিযোগ নিয়ে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘যারা দলের প্রার্থী, তারা তো নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। দল নির্বাচনী খরচ পাঠালে তো তাদের এলাকাতেই পাঠিয়ে দেবে। নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে তারা ঢাকায় কী করেন, সেটাই প্রশ্ন।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত