সাকিব আল হাসানের পরিচিতি নতুন করে দেওয়ার অবকাশ নেই। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ক্রিকেটবিশ্ব এক নামে চেনে তাকে। ‘সাকিব-ঝড়ে’ বারবার পর্যুদস্ত হয়েছে প্রতিপক্ষ। তাকে নিয়ে সব সময় থাকে আলোচনা, সমালোচনা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হয়েছেন সাকিব আল হাসান। মাগুরা-১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।

এবার খবর বেরিয়েছে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে তিনি 'কিংস পার্টি' হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলের সদস্যপদও নিয়েছিলেন। এমন খবর প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিক সমকাল।

পত্রিকাটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর এনিয়ে আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সাকিবকে নিয়ে রাজনীতিতেও শুরু হয়েছে ঝড়।

রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল, দ্বাদশ নির্বাচনের আগে কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত বিএনএমে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ না দিলেও এই দল গঠনের নেপথ্যের কারিগর ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বহুল আলোচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করিয়েছেন তিনি। এমনকি দলের নামটি তারই দেওয়া বলে দাবি করেছেন এর নেতারা। বিএনপির সংক্ষুব্ধ এই নেতার বাসায় বিএনএমের সদস্য ফরম পূরণ করে সাকিবের যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি পর্বের ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে জাতীয় দৈনিকটি।

প্রতিবেদনে জানা যায়, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পরবর্তী সময়ে নতুন দলে না গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন সাকিব।

বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রি হয়ে যাওয়ার পর এনিয়ে সংবাদ সম্মেলন মেজর হাফিজ। অস্বীকার করেন খবরের সত্যতা। বিএনপির বর্ষীয়ান এই নেতার দাবি, তিনি কখনোই বিএনএমের রাজনীতিতে যুক্ত হননি।

মঙ্গলবার বনানীতে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের ডেকে ওই ঘটনার নানাদিক তুলে ধরেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমি লজ্জিত হওয়ার মতো কিছুই করিনি। কয়েকজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসে। সে রাজনীতি করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। সাকিবকে কোনো উৎসাহ দেইনি। তারপর সে বিএনএমে যোগ দেয়নি। আমার কাছ থেকে তেমন কিছু না পেয়ে সে চলে যায়।

কেবল মেজর হাফিজই নন, এনিয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়কপরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।”

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন সাকিব আল হাসান বিএনএমের সদস্য হয়ে আওয়ামী লীগ থেকে কীভাবে সংসদ সদস্য হয়েছেন? জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে ইলেকশন করে জয় লাভ করেছে। পার্টির কাছে নমিনেশন চাওয়ার সময় সে পার্টির সদস্য। তার আগে তো সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তখন তাকে তো প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সেই শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে। সেভাবেই আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। সে এমপি হয়েছে। আমি এই বিষয়ে আর কিছু জানি না।