নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ০০:০৪

সিলেট বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব আসছে আজ, শেষ মুহূর্তেও নির্বাচন নিয়ে সংশয়

আজ রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির বহুল প্রত্যাশিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় সাড়ে সাত বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ। এবার নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইয়ের ঘোষণায় আরো বেড়েছে উদ্দীপনা।

তবে সম্মেলন ঘিরে একদিকে নেতাকর্মীদের মধ্যে যেমন উচ্ছ্বাস ও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে, তেমনি শেষ পর্যন্ত আদৌ নির্বাচন হবে কী না এ নিয়েও সংশয় বিরাজ করছে।

সিলেট বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের  মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাই না হয়ে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে।

 তবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট নূরুল হক বলেন, কেন্দ্র থেকে শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, সিলেটে কাউন্সিল হবে এবং দলের কাউন্সিলররাই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। এ লক্ষে ইতিমধ্যে ১৩টি উপজেলা ও চারটি পৌরসভায় কাউন্সিল করে কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

সম্মেলনে প্রার্থী হওয়া বিএনপি নেতারা নিজেদের পক্ষে বিজয় ছিনিয়ে আনতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের সাথে সার্বক্ষিণক যোগাযোগ রক্ষাসহ প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।

সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে নগরের দরগাহ গেট এলাকায় কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি থাকবেন। কেন্দ্রীয় আরো কয়েকজন নেতা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সম্মেলনে কাউন্সিল হলে জেলার ১৭টি এবং মহানগরের ২৭টি কমিটির ১৩২ জন কাউন্সিলর সরাসরি ভোট দিয়ে সিলেট বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁদের মধ্যে শক্তিশালী প্রার্থীরা মূলত প্রয়াত বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অনুসারী। দীর্ঘদিন ধরে দ্বিধাবিভক্ত থাকলেও সম্মেলন ঘিরে জেলা বিএনপির নেতাদের মধ্যে ঐক্যের সুর লক্ষ করা যাচ্ছে। দলের বিবদমান দুই পক্ষ সাইফুর রহমানের অনুসারী ও ইলিয়াস আলীপন্থী নেতারা ইতিমধ্যে একাধিকবার একসঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁদের বৈঠক ও একসঙ্গে কাজ করার মানসিকতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা বিএনপির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুজন—কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের শামীম ও জেলা শাখার সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি দিলদার হোসেন সেলিম। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তিনজনের মধ্যে।

তাঁরা হলেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ, আবদুল মান্নান ও এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন। তাঁরা হলেন হাসান আহমদ পাটোয়ারি রিপন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী, আবদুল আহাদ খান জামাল, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান শোয়েব, মইনুল হক ও মুজিবুর রহমান।


এদের মধ্যে মইনুল হক শনিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম জ্বালালি পংকি। সাধারণ সম্পাদক পদেও প্রার্থী তিনজন। তাঁরা হলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বদরুজ্জামান সেলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর আহ্বায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী)। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন হুমায়ুন কবীর শাহিন, মিফতা সিদ্দীকি, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, আজমল বক্ত সাদেক ও  হুমায়ুন আহমদ মাসুক।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছে ২০০৯ সালে। ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার আড়াই বছরের মাথায় আজ সম্মেলন হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত