সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ মে, ২০১৬ ১৩:১৩

সেলিম ওসমানের পক্ষে নারায়ণগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপির বিরল ঐক্য

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা একই সুরে নিন্দা জানালেও নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। এমনিতে বিপরীত ধারার রাজনীতি করলেও সেলিম ওসমানের পক্ষে দল দুটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিরল ঐক্য স্থাপন করেছেন।

 বিতর্কিত এই সাংসদের পক্ষে সেখানে প্রায় প্রতিদিনই সচেতন নাগরিক সমাজ ও সচেতন যুবসমাজের ব্যানারে সভা-মানববন্ধন করা হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা। একই অবস্থা বিএনপির ক্ষেত্রেও।

গত প্রায় এক সপ্তাহের কর্মসূচি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাংসদ সেলিম ওসমানের পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন ওই জেলার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ছাড়াও হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগ -বিএনপির রাজনীতি থেকেও এই ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের ভূমিকা।

স্থানীয় রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পরিবারটির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ওসমান পরিবারের বাইরে গিয়ে সেখানে কিছু করা সম্ভব নয় বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রাজনীতিক জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস বলেন, সবাই মিলেমিশে থাকতে হবে, তিনি এটাই শুধু বোঝেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকারও সেলিম ওসমানের পক্ষে। দুটি টক শোতে তাঁর বক্তব্য সেলিম ওসমানের পক্ষে গেছে বলে এলাকাবাসীর অনেকেই মত দিয়েছেন।

তবে এসবের মধ্যেও শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জে উদীচীসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। মূলত ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে রাবিউর রাব্বির জোরালো অবস্থানের কারনে কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন এই নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে পেরেছে।

গত ১৩ মে ধর্ম অবমাননার গুজব রটিয়ে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে নিজে নির্দেশ দিয়ে লাঞ্ছিত করেন সাংসদ সেলিম ওসমান। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ হয়। এসবের মধ্যেই শিক্ষককে উল্টো বরখাস্ত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষামন্ত্রী সেই বিদ্যালয় কমিটিকেই বাতিল করে শিক্ষককে পুর্নবহালের ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে  হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ করে সরকারকে আল্টিমেটাম দেয়। যদিও সেই আল্টিমেটাম থেকে পিছু হটে তারা। সেলিম ওসমানও এই বিষয়ে আর কোন কথা বলবেন না বলে পিছু হটেন।

তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় সেলিম ওসমানের শাস্তি না হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ক্ষোভ জানান।  

আপনার মন্তব্য

আলোচিত