নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ মে, ২০১৬ ২১:৪৬

সিলেটেও জাসদে ভাঙ্গন, পাল্টা কমিটি গঠন

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর কেন্দ্রের সাম্প্রতিক বিভক্তির প্রভাব পড়েছে সিলেটেও। ঢাকার মতো সিলেট জাসদেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার সিলেটে আম্বিয়া-বাদল অনুসারী জাসদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এদিন ইনুবিরোধী এই বলয়ের নেতারা সিলেট জেলা কমিটি গঠন করেন।

এরআগে গত ফেব্রুয়ারিতে ইনুঅনুসারী জাসদ নেতারা সিলেট জেলা কমিটি গঠন করেন। মঙ্গলবার গঠিত ইনুবিরোধী কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন কলমন্দর আলী। যিনি এরআগে ইনুপন্থী জেলা জাসদের সভাপতি ছিলেন।

তবে মঙ্গলবার গঠিত কমিটির আইনগত কোনো বৈধতা নেই বলে দাবি করেছেন ইনুপন্থী জাসদের জেলা সাধারণ সম্পাদক  কে এ কিবরিয়া চৌধুরী। আর বিদ্রোহীরা বলছেন ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার বাইরে এসে তারাই জাসদের মূল অংশ।

জানা যায়, গত ১২ মার্চ ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের নির্বাচন পর্বে সাধারণ সম্পাদক পদে নেতা নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়। একপক্ষ হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি ও শিরিন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে। অপরপক্ষ শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি ও নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে। এনিয়ে বিরোধ থেকে ভাঙ্গন দেখা দেয় জাসদে।

শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি, মঈনুদ্দীন খান বাদলকে কার্যকরি সভাপতি ও নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় 'বিদ্রোহী' জাসদের কমিটি। আরেক পক্ষে হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি ও শিরিন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

কেন্দ্রের এই বিভক্তি-ভাঙ্গন সত্ত্বেও সিলেটে জাসদে এর প্রভাব দৃশ্যমান হয়নি। যদিও জেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে বিরোধ ছিলো তবে তা কখনো প্রকাশ্য রূপ লাভ করেনি। সম্প্রতি সিলেট সফরে তথ্যমন্ত্রী জাসদ সভাপতি হাসানুল ইনু আসলে তাঁর কর্মসূচীতে দেখা যায়নি এডভোকেট জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন মহানগর জাসদ নেতৃবৃন্দদের। এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন দেখা দেয়।

অবশেষে মঙ্গলবার জেলা কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে সিলেটে জাসদের ভাঙ্গন। মঙ্গলবার কলন্দর আলীকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট ছয়ফুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি গঠন করেন আম্বিয়া-বাদলপন্থীরা। এ সময় মহানগর জাসদ সভাপতি জাকির আহমদও উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে গত ফেব্রুয়ারিতে লোকমান আহমদকে সভাপতি ও কে এ কিবরিয়া চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেট জেলা জাসদের কমিটি গঠন করা হয়।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর জাসদের সভাপতি এড.জাকির হোসেন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা কিছুদিন একত্রিত জাসদের অপেক্ষায় ছিলাম। তা না হওয়ায় কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জাসদ রাজনৈতিক কারণে ভাঙ্গেনি জানিয়ে তিনি বলেন, শিরিন আক্তার সাধারণ সম্পাদক হবেন কি হবেন না এই কারণে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ নিয়ে দল ভেঙেছে। গত কাউন্সিলে গায়ের জোরে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কমিটি গঠিত হওয়ার কারণে দলে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।

নব গঠিত জাসদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি কলন্দর আলী বলেন, সিলেটের জাসদের এখন দুইটি অংশে বিভক্ত হলেও আমাদের কারোরই কোন ক্ষোভ নেই। জাসদের ঐক্য হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ জানিয়ে তিনি বলেন, ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়েছে আমরা ১৪ দলের সাথে রয়েছি।

জাসদ (ইনু) সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক কে এ কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, গত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কিছু নেতা কর্মী জাসদ থেকে বের হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন হাসানুল হক ইনু ও শিরিন আক্তারের নেতৃত্বে গঠিত জাসদকে বৈধতা দিয়েছে, তাই কাগজপত্রে এটি বৈধ জাসদ। অপর জাসদ প্রসঙ্গে কিবরিয়া বলেন, এদের আইনগত কোন বৈধতা নেই।

এই কমিটির সভাপতি লোকমান আহমদের সাথে এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত