সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

০৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৯:০৮

হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভা ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং চট্ট-১৯৩৩) এর বার্ষিক সাধারণ সভা ও সম্মেলন শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪ টায় সিলেট জজকোর্টস্থ ২ নম্বর বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর নেতা মো: ছাদেক মিয়ার সভাপতিত্ব আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভা ও সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য তফাজ্জল হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ দাস চম্পু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুরুজ আলী।

সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর নেতা মোঃ আনছার আলীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এখলাছুর রহমান সুহেল, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিলু মিয়া, ছাতক উপজেলা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, স’মিল শ্রমিক সংঘ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন জিন্দাবাজার আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমান আলী, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সভাপতি পরেশ চাকমা।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, এক সময় সিলেট জেলায় হোটেল শ্রমিকদের উপর মালিকদের শোষণ-লুণ্ঠন, নিপীড়ন-নির্যাতন, অবৈধ জরিমানা, বিনাবেতনে চাকরিচ্যুতি ইত্যাদি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। শ্রমিকদের ওপর এ সকল অত্যাচার-নির্যাতন ও শ্রমিকদের সমস্যা সংকটের প্রশ্নে মালিকদের দালাল নেতৃত্বে থাকা সংগঠনগুলো ছিল নির্বিকার, তারা দালালি নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। জন্মলগ্ন থেকে এই সংগঠন তার শক্তি ও বাস্তবতা অনুযায়ী শ্রমিকদের উপর মালিকদের শোষণ-লুন্ঠন, নিপীড়ন-নির্যাতনের প্রত্যেকটি ঘটনার বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। সংগঠনের এই দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসে আজকের পর্যায়ে আসতে শত শত নেতাকর্মী ও সাধারণ শ্রমিককে অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ-তীতিক্ষা ও রক্ত ঝড়াতে হয়েছে এবং প্রতিটি পদক্ষেপে মালিকদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার সাথে সাথে মালিকের দালাল শ্রমিক নামধারী সংগঠন ও ব্যক্তির মুখোশ উন্মোচন এবং সংগঠনে ঢুকে পরা চর ও বিশ্বাসঘাতকদের বহিস্কার করে সংগঠন বিকশিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এভাবে ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের পরিণতিতে মহান মে দিবসে স্ববেতন ছুটির দাবিতে ২০১১ সাল থেকে দেশব্যাপী সফলভাবে কর্মবিরতি পালনের ফলে সংগ্রামের উচ্চতর রূপ নেয়। হোটেল সেক্টরকে শিল্প হিসাবে স্বীকৃতিসহ ন্যূনতম মূল মজুরি ঘোষণার দাবিতে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী গড়ে উঠা আন্দোলনের ফলে সরকার ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারে মতো হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরির গেজেট ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এবং ধারবাহিক আন্দোলন সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালে আবারও হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরির গেজেট ঘোষণা করা হয়। সৎ, সংগ্রামী শ্রমিক নেতৃত্বে সংগঠিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নিয়ে প্রতিটি সংগ্রামে তাদের শক্তি, সাহস, যোগ্যতা, দক্ষতা, প্রকাশের মাধ্যমে শ্রমিকরা যখন আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে, যখন ১০ হাজার টাকা ন্যূনতম মূল মজুরির দাবি, ঘোষিত গেজেট বাস্তবায়ন, হোটেল সেক্টরে শ্রম আইন বাস্তবায়ন ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলন চলছে তখন মালিকরা আরো বেপরোয়া হয়ে তাদের ষড়যন্ত্রে সরকার ও প্রশাসনকে যুক্ত করেছে।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে প্রধান অতিথি রফিকুল ইসলাম সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং চট্ট-১৯৩৩) এর সভাপতি মোঃ ছাদেক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকিরসহ কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিত শ্রমিকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং আগামী দিনে হোটেল শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করার প্রত্যয়ে নেতৃবৃন্দকে শপথবাক্য পাঠ করান।

সম্মেলন শেষে একটি লালপতাকা র‌্যালি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট-বন্দরবাজার-জেল রোড- জিন্দাবাজর পয়েন্ট- জল্লার পাড় রোড- মির্জাজাঙ্গাল- তালতলা- সুরমা মার্কেট পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে সিলেট জজকোর্টে গিয়ে শেষ হয়।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত