স্পোর্টস ডেস্ক

২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০১:২৯

মৃত্যু তারিখেও মিল ফিদেল-ম্যারাডোনার!

কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রো, আর্জেন্টিনার ফুটবলের অবিসংবাদিত সেরা ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। এ দুজনের আত্মিক সম্পর্ক ছিল। একে অন্যের কাছাকাছি এসেছেন, আদর্শিকভাবেও ছিলেন কাছাকাছি। ফিদেল ম্যারাডোনাকে বলতেন, ‘প্রিয় বন্ধু’। আর্জেন্টনাইন এই ফুটবল জাদুকরের জন্যে তার দ্বার ছিল অবারিত। ম্যারাডোনা ফিদেলের সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার ছিলেন স্পষ্ট সমর্থক।

মিল কি কেবল এখানেই? আদর্শিক এ মিল যে তাদের বিদায়ের তারিখেও মিলে যাবে সে কে জানত?

২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ফিদেল। দীর্ঘজীবন পাওয়া ফিদেলের জন্য সেদিন অশ্রু ঝরেছিল ম্যারাডোনার। প্রতিক্রিয়ায় ‘ফুটবল ঈশ্বর’ বলেছিলেন, ‘আমার বাবার মৃত্যুর দিন যে কষ্ট পেয়েছিলাম, সেই শোক, সেই দুঃখ যেন আজ আমাকে আবার আঁকড়ে ধরল।’

ফুটবলের জাদুকর ম্যারাডোনা দীর্ঘজীবন পেলেন না। তার মৃত্যু হলো ৬০ বছর বয়েসেই। তারিখও ওই একই; ২৫ নভেম্বর!

ফিদেলের কাছে ম্যারাডোনাকে বারবার যেতে দেখা গেছে। যে বা পা দিয়ে মোহাবিষ্ট করে রেখেছিলেন গোটা দুনিয়া। সেই পায়েই ম্যারাডোনা খোদাই করেছিলেন ফিদেলের ট্যাটু।

বাণিজ্যিক দাপটে খেলাধুলার জগতও এখন একটা ঘেরাটোপের মধ্যে চলে। দুনিয়া কাঁপানো ক্রীড়া সেলিব্রেটিরা সেকারণেই কোন রাজনৈতিক বিষয়ে মত জানাতে থাকেন আড়ষ্ট। তাদের চলতে হয় কতগুলো নিয়মের মধ্যে। ম্যারাডোনা এসব তোয়াক্কা করতেন না। বাণিজ্যিক মোড়লদের চোখ রাঙানি এড়িয়ে ফিদেলের রাজনৈতিক মতাদর্শ অনেকবারই প্রচার করতে দেখা গেছে তাকে। ভুল হোক, ঠিক হোক ম্যারাডোনা তার চিন্তার জায়গায় ছিলেন স্পষ্টবাদী। রাখঢাক করতে দেখা যায়নি তাকে।

স্কিলের মুন্সিয়ানা দেখিয়ে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ একাই জয় করেছিলেন ম্যারাডোনা। এরপর আর নেই জয়যাত্রা। তার মত আসেনি আর কেউ আর্জেন্টিনায় যে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতাতে পারে। পেশাদার ফুটবল ছাড়লেও দেশের টান ছাড়েননি তিনি, যখনই আর্জেন্টিনার খেলা বড়মঞ্চে তখনই ছুটে গেছেন তিনি। দলের জয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন, ভাসিয়েছেন; পরাজয়ের ছুড়েছেন তীব্র বাক্যবাণ।

আর্জেন্টাইন ফুটবলের এই মহানায়কের বিদায়ের দিন তার বন্ধু ফিদেলের বিদায়ের দিনেই ঘটল। ফিদেলের চোখে , ‘ফুটবলের চে গেভেরা’ চলে গেলেন সেই বন্ধুর বিদায়ের দিনেই; ব্যবধান মাত্র বছর চারের!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত