মঙ্গলবার পঞ্চম ও শেষ দিনে দুই সেশনে জয়ের জন্য ভারতকে ৩৮৪ রানের লক্ষ্য
দেয় স্বাগতিকরা। সিরিজ বাঁচাতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না ভারতের সামনে।
তবে এই কাজটা করতে হলে রেকর্ডই গড়তে হতো তাদের। কারণ, এর আগে টেস্ট
ক্রিকেটের ইতিহাসে দুই সেশনে এত রান তাড়া করে কোনো দল জয় পায়নি।
ব্যাট
করতে নেমে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি ভারতের। ১৯ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায়
সফরকারীরা। বিপদে পড়া ভারতকে রক্ষা করেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিরাট কোহলি
আর অজিঙ্কা রাহানে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২৬ ওভারে ৮৫ রান তোলেন তারা।
কোহলি-রাহানের
প্রতিরোধ ভেঙে যায় চা বিরতির ঠিক পরের বলেই। ৯৯ বলে ৭টি চারে ৫৪ রান করা
কোহলি রায়ান হ্যারিসের বলে জো বার্নসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
রাহানের
সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়ে চেতেশ্বর পূজারা আউট হয়ে গেলে ড্রর
দিকে এগোনো ম্যাচে নাটকীয়তা ফিরে আসে। এরপর দ্রুত রাহানেও ফিরে গেলে
অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনাও উঁকি দেয়।
রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সঙ্গে
নিয়ে শেষ পর্যন্ত আর বিপদ হতে দেননি ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে
জস হ্যাজলউডের বলে ৫৭তম ওভারের শেষ বলে অশ্বিনের দেয়া কঠিন ক্যাচটি স্লিপে
শেন ওয়াটসন ধরতে পারলে ম্যাচের ফল অন্য কিছু হলেও হতে পারত।
দিনের
খেলা ৪ ওভার বাকি থাকতে দুই অধিনায়ক ধোনি ও স্টিভেন স্মিথ হাত মিলিয়ে মাঠ
ছাড়েন। ম্যাচ ড্র হওয়ার আগে ৬৬ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৭৪ রান তোলে ভারত।
ধোনি ২৪ ও অশ্বিন ৮ বলে অপরাজিত থাকেন।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন হ্যারিস, মিচেল জনসন ও হ্যাজলউড।
এর
আগে ৭ উইকেটে ২৬১ রান নিয়ে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ না হারাটার
নিশ্চিত করে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় ইনিংস ঘোষণা করে। দুবার বৃষ্টির
বাধার পরও শন মার্শের ৯৯ রানের কল্যাণে এর আগে ৯ উইকেটে ৩১৮ রান তোলে
স্বাগতিকরা।
৬২ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা মার্শ রানআউট হওয়ার আগে
হ্যারিসের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন। এক রানের জন্য টেস্ট
ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক না পাওয়া মার্শ তার ২১৫ বলের ইনিংসটি ১১টি চার ও
দুটি ছয়ে সাজান। হ্যারিস ৬৮ বলে ২১ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয়
ইনিংসে বল করা ভারতের চার বোলার উমেশ যাদব, মোহাম্মদ সামি, ইশান্ত শর্মা ও
অশ্বিনের প্রত্যেকেই ২টি করে উইকেট নেন।
সিডনিতে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টটি আগামী মঙ্গলবার শুরু হবে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া:
৫৩০ (স্মিথ ১৯২, রজার্স ৫৭, হ্যাডিন ৫৫, ওয়াটসন ৫২; সামি ৪/১৩৮, অশ্বিন
৩/১৩৪, যাদব ৩/১৩০) ও ৩১৮/৯ ইনিংস ঘোষণা (ওয়ার্নার ৪০, রজার্স ৬৯, ওয়াটসন
১৭, স্মিথ ১৪, মার্শ ৯৯, বার্নস ৯, হ্যাডিন ১৩, জনসন ১৫, হ্যারিস ২১, লায়ন
১*, হ্যাজলউড ০*; ইশান্ত ২/৪৯, অশ্বিন ২/৭৫, যাদব ২/৮৯, সামি ২/৯২)।
ভারত:
৪৬৫ (বিজয় ৬৮, ধাওয়ান ২৮, পুজারা ২৫, কোহলি ১৬৯, রাহানে ১৪৭, রাহুল ৩,
ধোনি ১১, অশ্বিন ০, সামি ১২, যাদব ০, ইশান্ত ০*; হ্যারিস ৪/৭০, জনসন ৩/১৩৫,
লায়ন ২/১০৮, ওয়াটসন ১/৬৫) ও ১৭৪/৬ (বিজয় ১১, ধাওয়ান ০, রাহুল ১, কোহলি ৫৪,
রাহানে ৪৮, পূজারা ২১, ধোনি ২৪*, অশ্বিৱন ৮*; হ্যারিস ২/৩০, জনসন ২/৩৮,
হ্যাজলউড ২/৪০)।
ফল: ম্যাচ ড্র।
ম্যাচ সেরা: রায়ান হ্যারিস (অস্ট্রেলিয়া)।
সিরিজ: ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ৪ ম্যাচের সিরিজে জয় নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া।
আপনার মন্তব্য