সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ জুলাই, ২০২১ ০৫:০৬

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে যে পাঁচটি দিক প্রভাব ফেলতে পারে

রোববার রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে লড়বে ফুটবল দুনিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল। ৯ বারের কোপা চ্যাম্পিয়ন সেলেসাওদের মুখোমুখি হবে ১৪ বারের শিরোপাধারী আলবিসেলেস্তেরা।

কোপার ফাইনালে গত চার আসরে তৃতীয়বার উঠল আর্জেন্টিনা। গত আসরে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার আগের দুই আসরে চিলির বিপক্ষে শিরোপা হাতছাড়া করেছেন মেসিরা। এবার আরও কঠিন পরীক্ষা। প্রতিপক্ষ নেইমারের ব্রাজিল।

কোপার ফাইনালে এই পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। একবার জিতেছে আর্জেন্টিনা, দুইবারই জয় তুলেছে সেলেসাওরা।

কোপা আমেরিকার অন্যান্য ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের আগ্রহ কম থাকলেও, লাতিন আমেরিকার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল যখন মুখোমুখি হচ্ছে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ ও প্রেডিকশন। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারে এমন পাঁচটি দিক তুলে ধরা হলো:

দুই দলের জমাট রক্ষণভাগ

এখনও পর্যন্ত মাত্র ২ গোল হজম করেছে আর্জেন্টিনা। একই পরিমাণ গোল হজম করেছে ব্রাজিলও। ব্রাজিলের রক্ষণভাগের ফুটবলাররা ইউরোপের বড় ক্লাবে খেলেন, দানিলো, অ্যালেক্স সান্দ্রো জুভেন্টাসে খেলছেন, থিয়াগো সিলভা আছেন, এডের মিলিটাও আছেন।

আরও আছেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর মারকুইনহোস। মিলিটাও এবারের লা লিগায় লিওনেল মেসির বিপক্ষে খেলেছেন এবং তাকে গোল করতে দেননি।

খুব বেশি পরিচিত নাম না থাকলেও এবারের কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ ঠিকঠাক কাজ করে গেছে। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোকে আলাদাভাবে লক্ষ্য করা গেছে। অভিজ্ঞ নিকোলাস ওটামেন্ডি আছেন, তবে বল আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে মারকুস আকুনিয়া ভালা করলেও সামগ্রিক রক্ষণভাগ সামলানোর ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার কোচ স্কালোনি তার ওপর খুব ভরসা করতে পারছেন না।

ডিফেন্সিভ মধ্যভাগ আধুনিক ফুটবল ম্যাচ জয়ের নিয়ন্তা

রক্ষণভাগের ওপরের দিকে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রেয়াল মাদ্রিদের ক্যাসেমিরোও লিওনেল মেসির বিপক্ষে খেলে অভ্যস্ত। লিওনেল মেসি ২০১৮ সালের পর আর রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লা লিগায় গোল পাননি।

এদিক থেকে কিছুটা হলেও সুবিধা আর্জেন্টিনাও পাবে। নেইমারের ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের সতীর্থ লিয়ান্দ্রো পারেদেস খেলছেন আর্জেন্টিনার হয়ে। নেইমারের আক্রমণ ঠেকানোর কিছু টোটকা পারেদেস দিতে পারেন আর্জেন্টিনার সতীর্থদের।

নেইমার ও মেসি

বড় ম্যাচে বড় খেলোয়াড়দের প্রমাণের থাকে অনেক কিছু। ২০১৭ সালে নেইমার বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে যোগ দেয়ার পরে পর, মেসি আর নেইমার বড় কোন ম্যাচে একে অন্যের প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি হননি।

সে হিসেবে এই প্রথম এমন একটা প্রেক্ষাপটে দুই সাবেক সতীর্থ একে অন্যের বিপক্ষে মাঠে নামবেন। ২০১৩ সালের কনফেডারেশন্স কাপ এবং ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকার ট্রফি জিতেছেন নেইমার।ব্রাজিলের হয়ে তার পরিসংখ্যান বেশ সমৃদ্ধ। অল্প সময়ের মধ্যে ব্রাজিলের কিংবদন্তী ফুটবলার পেলের গোলসংখ্যার কাছাকাছি চলে এসেছেন নেইমার।

ক্লাব ফুটবলের তুলনায় জাতীয় দলের হয়েই নেইমার তার সহজাত ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ঝলক দেখাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এসেছেন।

অন্যদিকে লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে অনেক ম্যাচেই ভালো খেললেও সফলতা পাননি, কোন আর্ন্তজাতিক শিরোপা নেই লিওনেল মেসির ট্রফি ক্যাবিনেটে।

আক্রমণভাগ

যদিও মেসি ও নেইমারই দুই দলের আক্রমণভাগের নেতা। তবুও ব্রাজিলের হয়ে পাকোয়েতা এবং আর্জেন্টিনার হয়ে লওতারো মার্টিনেজ গোল এনে দিচ্ছেন।

গত দুই ম্যাচেই পাকোয়েতা গোল করেছেন ব্রাজিলের হয়ে। মার্টিনেজের পাশাপাশি আর্জেন্টিনার হয়ে দুইবার গোলদাতার খাতায় নাম উঠিয়েছেন আলেহান্দ্রো গোমেজ।

আর্জেন্টিনার হয়ে চমক দিতে পারেন নিয়মিত বদলি হিসেবে নামা অ্যানহেল দি মারিয়া। ব্রাজিলের হয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া গ্যাব্রিয়েল হেসুস আর ফাইনালে মাঠে নামতে পারবেন না।

তবে নেইমারের সঙ্গী হিসেবে আছেন রিচার্লিসন, ভিনিসিয়াস জুনিয়ররা।

মানসিক চাপ

স্বভাবতই ফাইনাল ম্যাচে দুই দলের ওপরই মানসিক চাপ থাকে। সেটা যখন হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিপক্ষে, সেটা আরো চাপ বাড়িয়ে দেয়।

নেইমার তো আর্জেন্টিনার সেমিফাইনাল ম্যাচের আগেই ঘোষনা দিয়েছেন, "আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই কোপা আমেরিকার ট্রফি জিততে চাই।"

এর আগে ২০১৯ সালে ব্রাজিল কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেবার নেইমারকে ছাড়াই সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দেয় ব্রাজিল। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত