সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ জুলাই, ২০২১ ২০:১৭

শততম টি-টোয়েন্টি জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টিতে শততম ম্যাচটি বড় জয়ে রাঙাল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দারুণ এক জয় তুলেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। হারারেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৭ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে দুই টাইগার ওপেনার। সৌম্য সরকার এবং নাইম শেখ দুইজনই তুলে নেন অর্ধশতক। ১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ধীর গতিতে করলেও নিজেদের উইকেটে মানিয়ে নিয়ে ব্যাট ঘোরাতে থাকেন এই দুই ব্যাটার।

ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে অর্ধশতকপূর্ণ করেই ফেরেন সৌম্য। অর্ধশতকের পর ডাবল নিতে গিয়েই রান আউট হয়ে ফিরতে হয় সৌম্যকে। তবে তাঁর আগে নিজের ৪র্থ অর্ধশতকের দেখা পেয়ে যান সৌম্য। তাতেই উদ্বোধনী ১০২ রানের জুটি ভাঙে বাংলাদেশের।

৪৫ বলে অর্ধশতকপূর্ণ করতে সৌম্য ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে মারেন ২টি ওভার বাউন্ডারিও। ৪৯ রানে খেলতে থাকা সৌম্য অর্ধশতকপূর্ণ করতে সিঙ্গেল নিলেই চলতো। কিন্তু ডাবল নিতে গিয়ে জিম্বাবুয়ের উইকেটরক্ষক চাকাবাহর দারুণ সিদ্ধান্তে রানআউট হন সৌম্য।

এরপর অর্ধশতক তুলে নেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখ। ইনিংসের ১৬তম ওভারে নাইম শেখ নিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অর্ধশতক তুলে নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪০ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। দুর্দান্ত অর্ধশতক তুলে নিতে নাইম ৪টি বাউন্ডারি হাঁকান।

সৌম্য অর্ধশতক করে ফেরার পরে উইকেটে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে অধিনায়ক খুব বেশি সময় উইকেটে টিকতে পারনেনি। ১২ বলে ১৫ রান করে ফেরেন রানআউট হয়ে। এরপর নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটা সারেন নাইম। ৫১ বলে ৬ চারে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন নাঈম। ৮ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৪ রান করেন সাড়ে চার বছর পর এই সংস্করণে খেলতে নামা নুরুল হাসান সোহান।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তবে এরপর রেগিস চাকাবাহকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান ওয়েসলি মাধেভের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগেই জিম্বাবুয়েকে ১৫২ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ।

শুরুর ধকল কাটিয়ে দলের হাল ধরেন মাধেভের এবং চাকাবাহ। দ্বিতীয় উইকেটে এই জুটি থেকে আসে ৬৪ রান। মাত্র ৩৬ বলের তৃতীয় উইকেটের জুটি ভাঙে মাধেভের ২৩ বলে ২৩ রান করে ফিরলে। মাধেভেরকে কট অ্যান্ড বল করেন সাকিব আল হাসান। এর আগে মারুমানিকে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

৭৪ রানে দুই উইকেট হারানোর পর ডিওন মায়ার্সকে সঙ্গে নিয়ে বড় স্কোরের দিকেই ব্যাট ছোটান চাকাবাহ। তবে তাকে খুব বেশি সময় উইকেটে থাকতে দেননি উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে সোহানের বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়ে চাকাবাহকে। ২২ বলে ৫টি চার ও দুটি ছক্কায় দারুণ এই ইনিংসটি সাজান জিম্বাবুইয়ান এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

৯১ রানে চাকাবাহ ফেরার পর স্কোরবোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ হতেই ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে হয় অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে। এবার আঘাত হানেন তরুণ টাইগার পেসার শরিফুল ইসলাম। ৯২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর আর ভেঙে পড়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং অর্ডার।

১০ ওভারে ৯১ রান তোলা জিম্বাবুয়ে ১১তম ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে। দলীয় ১১১ রানের মাথায় মুসাকন্দাকে এলবি'র ফাঁদে ফেলেন সৌম্য। এরপর বিপদজনক হয়ে ওঠা মায়ার্সকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান শরিফুল। মায়ার্স ২২ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। শেষ দিকে লুক জংজির ১৬ বলে ১৮ রানই ছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটারদের সর্বোচ্চ স্কোর। আর তাতেই ১৯তম ওভারে ১৫২ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। আর দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম। এছাড়া সাকিব আল হাসান এবং সৌম্য সরকার নেন একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:

জিম্বাবুয়ে: ১৫২/১০; ১৯ ওভার; (মাধেভের ২৩, মারুমানি ৭, ভাকাবাহ ৪৩, মায়ার্স ৩৫, সিকান্দার ০, মুসাকান্দা ৬, বার্ল ৪, জংজি ১৮, মাসাকাদজা ৪, রিচার্ড ০ এবং মুজারাবানি ৮), সাইফউদ্দিন ৪-০-২৩-২, মোস্তাফিজুর ৪-০-৩১-৩, সাকিব ৪-০-২৮-১, শরিফুল ৩-০-১৭-২, মেহেদি ১-০-১৮-০, রিয়াদ ১-০-১৪-০ এবং সৌম্য ২-০-১৮-১।

বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ১৫৩/২ (নাইম ৬৩*, সৌম্য ৫০, মাহমুদউল্লাহ ১৫, সোহান ১৬*; মুজারাবানি ৩.৫-০-১৯-০, মাধেভেরে ৩-০-২৪-০, এনগারাভা ৪-০-৪৬-০, জঙ্গুয়ে ৩-০-২৮-০, রাজা ২-০-১৬-০, মাসাকাদজা ৩-০-২০-০)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত