স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ আগস্ট, ২০২১ ২২:০৯

সাকিবের বাজে দিনে ক্রিস্টিয়ান ঝড়ে অজিদের জয়

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচেই সিরিজের নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছিল। টানা তিন জয়ে সিরিজ পকেটে পুরে নেওয়া বাংলাদেশ অবশেষে হারল, এবং সিরিজে প্রথমবারের মত জয়ের মুখ দেখল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিকদের ৩ উইকেটে হারিয়ে অজিরা।

শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ছয় বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় অতিথিরা।

এরআগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অজিদের ২৩ রানে হারায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট এবং তৃতীয় ম্যাচে ১০ রানের জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।

সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এদিনও ব্যর্থ হন অজি অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েড। দলীয় তিন রানে মাহেদী হাসানের ঘুর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই বাঁ-হাতি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

তিন নম্বরে নামা ড্যান ক্রিস্টিয়ান মাঠে নেমেই ঝোড়ো শুরু করেন। সাকিবের করা চতুর্থ ওভার থেকে পাঁচটি ছক্কাসহ ৩০ রান তুলে নেন এই ব্যাটসম্যান।

পরের ওভারে অজি শিবিরে আঘাত হানেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে বেন ম্যাকডারমটকে আউট করেন নাসুম।

আগের ম্যাচগুলোর ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও জ্বললেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিবকে ৫ ছক্কা হাঁকানো ড্যান ক্রিস্টিয়ানকে সাজঘরে ফেরান ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে। শামিম পাটোয়ারির হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৫ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন ক্রিস্টিয়ান।

এরপর তৃতীয় ওভার করতে এসে ময়েজেস হেনরিকসকে রান আউট করেছেন সাকিব। মিচেল মার্শের স্ট্রেইট ড্রাইভ সাকিবের হাতে লেগে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে যায়। ফলে ৪ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় হেনরিকসকে। এরপর অ্যালেক্স ক্যারি মোস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মাত্র ১ রান করে।

পুরো সিরিজ জুড়েই দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিচেল মার্শকে দারুণ এক অফ ব্রেকে বোল্ড করেছেন শেখ মাহেদী। সপ্তম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে বের করে নেন অ্যাস্টন আগার ও অ্যাস্টন টার্নার। যদিও শেষদিকে শরিফুলের বলে মিড অনে শামীমের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন ২৭ রান করা আগার। অবশ্য টার্নার ৯ ও অ্যান্ড্রু টাই ৪ রান করে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।

এরআগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও ব্যাট হাতে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি বাংলাদেশের ওপেনাররা। দলীয় ২৪ রানেই বাংলাদেশ সৌম্য সরকারের উইকেট হারায়। আগের তিন ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য। অজি পেসার জস হ্যাজেলউডের বলে কভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন সৌম্য। তবে টাইমিং গড়বড়ের কারণে তা চলে যায় সোজা অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। তাতেই শেষ হয় সৌম্যর ৮ রানের ইনিংস। আগের তিন ম্যাচে সৌম্যর রান যথাক্রমে ২, ০ ও ২ রান।

সৌম্য ফেরার পর নাইম শেখকে নিয়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ১৫ রানে তিনি জশ হ্যাজেলউডের ওপর চড়াও হতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। এর ফলে ৪৮ রানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়। সাকিবের পর উইকেটে থিতু হতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তিনি কোনো রান না করেই মিচেল সোয়েপসনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন সাজঘরে। এরপর নাইমকে নিয়ে ইনিংস বড় করতে পারননি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানও। তিনিও রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডব্লিউ হয়েছেন।

আগের বলেই মিচেল সোয়েপসনের বলে এলবিডব্লিউ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা হয়েছিল নাইমের। যদিও এই জীবন পাওয়ার সুবিধা নিতে পারেননি তিনি। এই টাইগার ওপেনার ৩৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে সোয়েপসনের বল স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে কাউ কর্নারে ওয়েডের ক্যাচ হয়েছেন।

অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে অ্যাস্টন আগারের বলে ডিপ মিড উইকেটে ময়েজেস হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৭ বলে ২১ রান করা আফিফ। সাত নম্বরে নামা শামীম হোসেন ৬ বলে ৩ রান করে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে মিড উইকেটে ক্যারিকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।

শেষ দিকে মাহেদীর ১৬ বলে ২৩ রানের ইনিংসে ভর করে একশো পেরুনো রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ ৬ বলে ২ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ- ১০৪/৭ (২০ ওভার) (নাইম ২৮, সৌম্য ৮, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ০, আফিফ ২১, শামীম ৩, সোয়েপসন ৩/১২, হ্যাজেলউড ২/২৪)

অস্ট্রেলিয়া- ১০৫/৭ (১৯ ওভার) (ক্রিস্টিয়ান ৩৯, ম্যাকডারমট ৫, ওয়েড ২, মার্শ ১১, ক্যারি ১, আগার ২৭, টার্নার ৯*, টাই ৪*; মেহেদী ২/১৭, মোস্তাফিজ ২/৯)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত